মিতুর পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে ফেরেন কামরুজ্জামান। দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হলেও পরিস্কার করে কিছুই বলেননি তিনি।
কামরুজ্জামান বলেন, চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলা। তদন্ত চলছে।
‘বিভিন্ন পয়েন্টে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। বিভিন্ন তথ্যউপাত্ত পেয়েছি। তাদের জবানবন্দি নিয়েছি। এখন তথ্যগুলো বাদির কাছ থেকে যাচাইবাছাই করে নিতে হবে। সেজন্য আমরা মামলার বাদিকে (বাবুল আক্তার) পুনরায় ডাকব। খুব শীঘ্রই তাকে ডেকে আবারও জিজ্ঞাসাবাদ করব।
গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর বাবুল আক্তারকে প্রথম দফা তলব করে সিএমপিতে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।
মিতুর মা-বাবা ও বোনকে জিজ্ঞাসাবাদের পর তারা তদন্তকারী কর্মকর্তাকে বাবুল আক্তারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ করেছেন বলে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়েছে।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, বাবুল আক্তার, তার বোন, মা-বাবা যে মিতুর উপর নির্যাতন করত। মিতু এই নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিল।
এছাড়া মিতুর সঙ্গে ভাল আচরণ না করলেও হত্যাকান্ডের ৫-৭ দিন আগে থেকে বাবুল আক্তারের আচরণ বদলে গিয়েছিল। এতে সন্দেহ হয়েছিল মিতুর।
এছাড়া বাবুল আক্তারের বোন লাবণী মিতুকে জানিয়েছিল, বাবুল আক্তারের সঙ্গে বর্ণিকে (দুর্ঘটনায় নিহত এস আই আকরামের স্ত্রী) বিয়ে দেবে।
জানতে চাইলে এডিসি কামরুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, বাবুল আক্তারের বোনকে আমি জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। তাদের পরিবারের অন্য সদস্যদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করব। এরপর বাবুল আক্তারকে ডাকব।
এদিকে মিতুর পরিবারের অভিযোগ গণমাধ্যমে প্রকাশের পরদিন বাবুল আক্তার ফেসবুকে দীর্ঘ স্ট্যাটাস দিয়ে নিজের অবস্থান পরিস্কার করেন। এতে তিনি দাবি করেন, মিতুর অপ্রাপ্তবয়স্ক খালাত বোনকে বিয়ে করতে রাজি না হওয়ায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হচ্ছে।
তবে এডিসি কামরুজ্জামান জানিয়েছেন, বাবুল আক্তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে কি লিখেছেন, সেটা তিনি দেখেননি। এ নিয়ে গণমাধ্যমের কোন সংবাদও তার চোখে পড়েনি।
মিতুর বাবা-মা, বোনের অভিযোগের পর তদন্তের বিষয় এখন দাম্পত্য অশান্তি কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রত্যেক পয়েন্টের উপর আমাদের নজরদারি আছে।
সুনির্দিষ্টভাবে জানাতে না পারলেও মামলার তদন্তে অগ্রগতি হচ্ছে বলে জানান কামরুজ্জামান।
তিনি বলেন, সাতজন আসামি গ্রেফতার হয়েছে। ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি হয়েছে। পলাতক যারা আছে তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। নির্দেশদাতা কে সেটা বের করার চেষ্টা করছি।
এর আগে গত ২২ ডিসেম্বর মোশাররফ এবং ২৬ জানুয়ারি মোশাররফ ও তার স্ত্রী সাহেদা মোশাররফকে নিজ কার্যালয়ে তলব করে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।
বাবুল আক্তারের মা-বাবা এবং দুই খালাতো ভাইকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।
গত বছরের ৫ জুন সকালে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় নগরীর ও আর নিজাম রোডে দুর্বৃত্তদের উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত ও গুলিতে নিহত হন সদর দপ্তরে কর্মরত তৎকালীন পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু। এ ঘটনায় বাবুল আক্তার নিজে বাদি হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৭
আরডিজি/টিসি