ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

নগর ভবনের ফটক থাকবে সিরাজউদ্দৌলা সড়কেও

আল রাহমান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৭
নগর ভবনের ফটক থাকবে সিরাজউদ্দৌলা সড়কেও নগর ভবনের নকশায় বর্তমান ফটকের পাশাপাশি সিরাজউদ্দৌলা সড়কেও ফটক রাখা হচ্ছে।

চট্টগ্রাম: আন্দরকিল্লা মোড়ে নগর ভবনের নকশায় বর্তমান ফটকের পাশাপাশি সিরাজউদ্দৌলা সড়কেও ফটক রাখা হচ্ছে। এর ফলে প্রধান দুটি সড়ক থেকে অনায়াসে নগর ভবনে গাড়ি ঢুকতে ও বেরুতে পারবে। আইকনিক টাওয়ার হিসেবে ভবনটির শীর্ষে থাকবে ‘সিটি ক্লক’।

মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বাংলানিউজকে এসব তথ্য জানান চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী লে. কর্নেল মহিউদ্দিন আহমদ।

তিনি বলেন, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে নগর ভবনে মোমিন রোডমুখী ফটকের পাশাপাশি সিরাজউদ্দৌলা সড়কেও ফটক দেওয়া হবে।

এর ফলে ভিআইপি এন্ট্রি ও কমন এন্ট্রি ভাগ করা যাবে। ইতিমধ্যে বর্তমান মেয়র দায়িত্ব গ্রহণের পর নগর ভবনের আগের নকশায় অনেক পরিবর্তন আনা হয়েছে।
বিশেষ করে আগে ছিল দুটি বেইজমেন্ট, এখন তিনটি করা হয়েছে। এ ছাড়া ২০ তলার পরিবর্তে উচ্চতায় ২৬ তলা হবে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, আগে নগর ভবনটির স্থান নির্ধারণ করা হয়েছিল একেবারে সড়ক ঘেঁষে। মুখ রাখা হয়েছিল মোমিন রোডের দিকে। নতুন নকশাটি এমনভাবে করা হয়েছে যাতে মোমিন রোড, আন্দরকিল্লা মোড় ও সিরাজউদ্দৌলা সড়ক থেকে নগর ভবনের দৃষ্টিনন্দন স্থাপত্যশৈলী দেখা যাবে। এর জন্য পুরোনো ভবনটি ভেঙে নতুন নগর ভবন গড়ে তোলা হবে। ভবনের সামনে এবং বাকি তিন পাশে থাকবে সবুজের সমারোহ, বাগান। নতুন নকশাটি করেছেন খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠান প্রণয়ন’র প্রধান স্থপতি সোহেল মোহাম্মদ শাকুর।

দশমিক ৮৯ একর জায়গায় সাজানো হবে নগর ভবন। প্রতিটি ফ্লোরের আয়তন হবে ১৪ হাজার ৬০০ বর্গফুট। ভবনের মোট আয়তন হবে ৪ লাখ ৮ হাজার বর্গফুট। খরচ হবে প্রায় ১৬০ কোটি টাকা। ইতিমধ্যে একটি তফসিলি ব্যাংক শর্তসাপেক্ষে নগর ভবনে বিনিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছে। অনেক শিল্পগ্রুপেরও আগ্রহ আছে নগর ভবনে স্পেস নেওয়ার। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে তিন-চার মাসের মধ্যে ভেঙে ফেলা হবে পুরোনো ভবন। তখন চসিকের কার্যক্রম অস্থায়ীভাবে স্থানান্তর হবে টাইগারপাসের একটি সাততলা ভবনে। ইতিমধ্যে ভবনটি ব্যবহারের উপযোগী করা হয়েছে। ওই ভবনের জন্য রেডি করা হচ্ছে পাওয়ার সাব স্টেশনও।   

নগর ভবনের প্রথম ফ্লোরে থাকবে চট্টগ্রামের ইতিহাস-ঐতিহ্য-সংস্কৃতিনির্ভর প্রদর্শনী, ম্যুারাল ইত্যাদি। এখানে চিত্র প্রদর্শনীসহ কালচারাল আয়োজনের ব্যবস্থা থাকবে। দ্বিতীয় থেকে সপ্তম ফ্লোরে থাকবে ভাড়া দেওয়া বাণিজ্যিক অফিস। অষ্টম ফ্লোরে থাকবে ফুডকোট, প্রার্থনার ঘর। নবম থেকে ২১তম ফ্লোরে সাজানো হবে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের কার্যালয়। ২২-২৫তম ফ্রোরে থাকবে ২৫০ আসনের মাল্টিপারপাস হল, কনফারেন্স হল ও ব্যাংকুয়েট হল। সবার ওপরে থাকবে সিটি ক্লক।   

চসিকের একজন স্থপতি বাংলানিউজকে জানান, নগর ভবনটি হবে সর্বাধুনিক। এখানে রেইন ওয়াটার হারভেস্টিংয় সিস্টেম যেমন থাকবে তেমটি ওয়েস্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টও থাকবে। শুধু তাই নয়, এটি হবে এনার্জি ইফিশিয়েন্ট বিল্ডিং। আলো-বাতাসের অনুকূলে নকশার পাশাপাশি এখানে থাকবে সর্বাধুনিক কাচ, বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম। ফলে লাইট ও এসির ব্যবহার হবে কম। চারপাশে থাকবে সবুজের সমারোহ।  

চসিকের একজন কর্মকর্তা জানান, ২০১০ সালে ১৫ হাজার বর্গফুট জায়গায় ২০ তলা নগর ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। ওই বছরের ১১ মার্চ ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন তৎকালীন মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী। প্রকল্প ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছিল ৪৮ কোটি ৮৪ লাখ ৫৬ হাজার ১৯ টাকা। এ লক্ষ্যে দরপত্র আহ্বান করা হলে সর্বনিম্ন দরদাতা মেসার্স এজে কনস্ট্রাকশনকে একই বছরের ১০ মার্চ কার্যাদেশ দেওয়া হয়। ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে ভবনের ছয় তলা নির্মাণের কথা ছিল প্রতিষ্ঠানটির।

ওই বছরের ১৭ জুনের নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হন বিএনপি সমর্থিত এম মনজুর আলম। তিনি নগর ভবনের নির্মাণকাজ বন্ধ করে দেন। ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে পুনরায় নির্মাণকাজ শুরু করা হয়। এ সময় পাইলিংসহ আনুষঙ্গিক কিছু কাজ হয়েছিল।

বর্তমান মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন দায়িত্ব নেওয়ার পর নগর ভবনের ডিপিপি তৈরির নির্দেশ দেন চসিক কর্মকর্তাদের। এরপর আবার নতুন উদ্যমে গতি পায় নগর ভবন প্রকল্প।

** নগর ভবনের জায়গায় হচ্ছে পার্কিং

বাংলাদেশ সময়: ২০৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৭

এআর/টিসি

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।