ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

একুশের মা-বাবাকে খুঁজে বের করার নির্দেশ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১২৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৭
একুশের মা-বাবাকে খুঁজে বের করার নির্দেশ নবজাতক একুশ

চট্টগ্রাম: জন্ম দিয়ে ডাস্টবিনে ফেলে যাওয়া মা-বাবাকে শনাক্তের জন্য পুলিশকে আদেশ দিয়েছেন আদালত।  ১২ মার্চের মধ্যে নগরীর আকবর শাহ থানাকে বিষয়টি প্রতিবেদনের মাধ্যমে আদালতকে অবহিত করতে হবে।

মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রামের শিশু বিষয়ক বিশেষ আদালতের বিচারক (প্রথম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ) জান্নাতুল ফেরদৌস এই আদেশ দিয়েছেন।

এদিকে আদালতের আদেশে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের হাসপাতালের পরিচালকের পক্ষ থেকে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়েছে।

  প্রতিবেদনে একুশ সুস্থ আছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন শিশু আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখার এএসআই মনির আহমেদ।

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, উদ্ধার হওয়া নবজাতকের মা-বাবা কে, এই পরিচয় উদঘাটন করে ১২ মার্চ আদালতে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য বলা হয়েছে আকবর শাহ থানাকে।

  পুলিশ এই প্রতিবেদন দাখিলের পর শিশুটিকে যারা দত্তক নিতে আবেদন জানিয়েছেন এই বিষয়ে বিশেষ শুনানির সময় নির্ধারণ করবেন আদালত।

এদিকে নবজাতক একুশকে দত্তক নিতে মোট ৯টি আবেদন আদালতে জমা পড়েছে বলে বাংলানিউজকে জানিয়েছেন সাধারণ নিবন্ধন শাখার এএসআই মনির আহমেদ।

গত ২৬ ফেব্রুয়ারি একদিনে ছয়টি আবেদন জমা পড়ার পর গত দুইদিনে জমা পড়েছে আরও তিনটি।   এরা হলেন, ব্যবসায়ী এরশাদ মামুন, গৃহিণী রোখসানা আক্তার ও নাসিমা বেগম।

এর আগে যারা একুশকে দত্তক নিতে আগ্রহ দেখিয়েছেন তারা হলেন অ্যাডভোকেট চুমকি চৌধুরী, ব্যবসায়ী মো.শহীদুল্লাহ, চট্টগ্রাম ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেডের (সিইউএফএল) কর্মকর্তা  মোহাম্মদ উল্লাহ, সাধারণ গৃহিণী জেসমিন আক্তার, অংকুর সোসাইটি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের জুনিয়র সহকারী শিক্ষিকা লুবনা ইয়াসমিন এবং ডা.জাকের ইসলাম ও শাকিলা আক্তার দম্পতি।

গত ২০ ফেব্রুয়ারি (সোমবার) রাত ১২টার দিকে নগরীর কর্ণেলহাট এলাকার লাইফ কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টার সংলগ্ন ড্রেনে নবজাতকটিকে পড়ে থাকতে দেখেন কয়েকজন যুবক।  তাদের মধ্যে নগর ছাত্রলীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক আশরাফ উদ্দিন টিটু ও এমইএস কলেজ ছাত্রলীগের কর্মী মোমিন শাহসহ বেশ কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মী ছিলেন।   তারা আকবর শাহ থানার সেকেন্ড অফিসারকে ফোন করে বিষয়টি জানান।

আকবর শাহ থানার ওসি আলমগীর মাহমুদ বিষয়টি জানতে পেরে তাৎক্ষনিকভাবে টহলরত পুলিশকে নবজাতক শিশুটিকে উদ্ধারের নির্দেশ দেন।  পুলিশের টিম ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকা ওই নবজাতককে প্রথমে নগরীর এ কে খান এলাকার আল আমিন হাসপাতাল এবং এরপর নগরীর আগ্রাবাদে মা ও শিশু হাসপাতালে নিয়ে যায়।

ওই হাসপাতালে ইনকিউবেটর খালি না থাকায় শিশুটিকে নিয়ে যাওয়া হয় চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ৩২ নাম্বার ওয়ার্ডে।  শিশুটিকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (ইনকিউবেটর) রেখে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে পুলিশ।   সঙ্গে থেকে পুরো বিষয়টি নিবিড়ভাবে তদারক করেন ওসি আলমগীর মাহমুদ।

এরপর গত ২৩ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামের মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে নবজাতককে উদ্ধার করা নিয়ে একটি প্রতিবেদন দেন আকবর শাহ থানার ওসি।  চট্টগ্রামের প্রথম মহানগর হাকিম এস এম মাসুদ পারভেজ নবজাতকের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করতে চমেক হাসপাতালের পরিচালককে নির্দেশ দিয়েছেন। আর নবজাতককে পূর্ণাঙ্গ নিরাপত্তা দেয়ার জন্য আকবর শাহ থানার ওসিকে নির্দেশ দেন।

একুশের রাতে উদ্ধার হওয়ায় সেই নবজাতকের নাম ‘একুশ’ রেখেছেন আকবর শাহ থানার ওসি আলমগীর মাহমুদ।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭২৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৭

আরডিজি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।