বোয়ালখালীর সাবেক কমান্ডার আবুল বশর সম্প্রতি সাংসদ বাদল ‘মুক্তিযোদ্ধা নন’ এমন মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তারা এ মন্তব্য করেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, বাপ-চাচারা সবাই যদি স্বাধীনতার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে থাকেন, সাংসদ মঈনউদ্দিন খান বাদল একলা মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ করে সাহসের সাথে যুদ্ধ করেন তাহলে তাকে একটি জাতীয় খেতাব দেওয়া অবশ্যই প্রয়োজন।
দেওয়ান মাকসুদের পাঠানো বিবৃতিতে সই করেছেন ডা. মাহবুবুল আলম, ইঞ্জিনিয়ার আবদুল্লাহ আল হারুণ, মো. শাহজাহান খান, জামাল উদ্দীন (ফকির জামাল), মো. হারিছ, জাহাঙ্গীর আলম, এএসএম মাহবুবুল আলম, জাহিদ হোসেন, আব্দুল গফুর, নুরুউদ্দিন চৌধুরী, ফাহিম উদ্দিন আহম্মদ, সামসুল আলম, সামসুল হক, আবুল বশর, সাইফুল আনোয়ার, আবদুর নূর, শাহজালাল, এনায়েত আলি, মুকুল দাশ, আবুল কাশেম, আবদুল লতিফ, আনিস কাদেরী, জয়নাল আবেদীন, আবুল বশর, শফি, রফিক আহমদ বিল্লা, আবদুল মোমেন, মোহাম্মদ রফিক, সিদ্দিক আহমদ ও আবদুল মান্নান চৌধুরী।
স্বাধীনতার ৪৬ বছর পর সারা দেশে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের যাচাই বাছাই শুরু হয়েছে।
যুদ্ধকালীন কমান্ডারদের বিবৃতিতে বলা হয়, সাংসদ বাদলের বাবা আহম্মদ উল্লাহ খান ওসি হিসেবে সিলেটে কর্মরত অবস্থায় মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন? সাংসদের চাচা বোয়ালখালী শান্তি বাহিনীর চেয়ারম্যান ছিলেন? আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই।
আহমদ উল্লাহ খান মুক্তিযুদ্ধকালীন স্বাধীনতাবিরোধী কার্যকলাপ করে থাকলে, স্বাধীনতার দীর্ঘ নয় বছর পর উচ্চপদস্থ পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে স্বসম্মানে চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করেন? যদি তিনি অপকর্মে লিপ্ত থাকতেন স্বাধীনতার পর অন্য যুদ্ধপরাধীদের মতো তিনিও পালিয়ে যেতেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, মরহুম মৌলভি সৈয়দ আহমেদের নেতৃত্বে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে নিয়ে ভারতের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধারা অস্ত্র গোলাবারুদসহ চট্টগ্রাম শহরে ঢুকতে থাকলে তাদের নিরাপদ আশ্রয়, অস্ত্র সংরক্ষণ, চিকিৎসাসেবা, অর্থনৈতিক সহযোগিতা, যাতায়াত ব্যবস্থা ইত্যাদির দায়িত্ব গুরুত্বসহকারে পালন করেন। এই আশ্রয় স্থানগুলো আগে থেকে নির্ধারিত না থাকলে মুক্তিযোদ্ধাদের চট্টগ্রাম শহর অঞ্চলে যুদ্ধ করা সম্ভব হতো না এবং চট্টগ্রাম শহর অঞ্চলের মুক্তিযোদ্ধাদের এতগুলো সফল অপারেশন পরিচালনা করাও সম্ভব হতো না।
মুক্তিযোদ্ধা সাংসদ মঈনউদ্দিন খান বাদল স্থানীয় ট্রেনিংপ্রাপ্তদের সাথে নিয়ে ভারতের ট্রেনিংপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাসহ চট্টগ্রাম শহরে সক্রিয়ভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তিনি বিশ্বকাঁপানো নৌ কমান্ডোদের ‘অপারেশন জ্যাকপট’র যোদ্ধাদের সাথে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন এবং তার সাহসী ভূমিকার জন্য অপারেশন জ্যাকপট পরিপূর্ণ সফলতা অর্জন করে।
তাই সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য পাঠকারী সাবেক কমান্ডার আবুল বশরকে সত্যতা যাচাইয়ের জন্য অপারেশন জ্যাকপটের অধিনায়ক বীর উত্তম, বীর বিক্রম, জাতীয় দ্বৈত খেতাবধারী কমান্ডার ও বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হিসেবে অবসরগ্রহণকারী বীর মুক্তিযোদ্ধা এডাব্লিউ চৌধুরীর কাছ থেকে জেনে নেওয়ার জন্য যুদ্ধকালীন গ্রুপ কমান্ডার, ডেপুটি কমান্ডার ও মুক্তিযোদ্ধারা আহ্বান জানান।
একজন সাংসদ এবং স্বনামধন্য মুক্তিযোদ্ধাকে স্বার্থন্বেষী মহলবিশেষের প্ররোচনায় চরিত্র হনন ও হেয় প্রতিপন্ন করায় চট্টগ্রাম অঞ্চলের যুদ্ধকালিন গ্রুপ কমান্ডার, ডেপুটি কমান্ডার ও মুক্তিযোদ্ধারা তীব্র প্রতিবাদ, ঘৃণা ও নিন্দা জানান।
চট্টগ্রামের মুক্তিযোদ্ধা, পেশাজীবী, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সমাজশক্তি ও সচেতন জনগণকে এ কুচক্রীমহল থেকে সাবধান থাকার জন্য আহ্বান জানান।
** মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্য থেকেই সভাপতি চান বোয়ালখালীর কমান্ডাররা
বাংলাদেশ সময়: ২০৫৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১৭
এআর/টিসি