ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

‘দুদকের ভেতরে যদি কোন দুর্নীতি থাকে সেটাও লিখুন’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৫৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১৭
‘দুদকের ভেতরে যদি কোন দুর্নীতি থাকে সেটাও লিখুন’ দুদক মহাপরিচালক (অনুসন্ধান ও তদন্ত) মো.শামসুল আরেফিন

চট্টগ্রাম: দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অভ্যন্তরে দুর্নীতি থাকলে সেটাও গণমাধ্যমে তুলে ধরার আহ্বান জানিয়েছেন দুদক মহাপরিচালক (অনুসন্ধান ও তদন্ত) মো.শামসুল আরেফিন।  দুদক ৭৩ শতাংশ দুর্নীতির তথ্য গণমাধ্যমের কাছ থেকে সংগ্রহ করে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

দুদক মহাপরিচালক গণমাধ্যম কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশনের ভেতরেও যদি কোন দুর্নীতি থাকে সেটাও লিখুন।   তাহলে আমরা চাপের মধ্যে থাকব।

  আমরা স্বচ্ছতার সঙ্গে এগিয়ে যেতে বাধ্য হব।   আমরা চাই, আপনারা বেশি বেশি করে লিখুন।
  বেশি বেশি করে দুর্নীতির কথাগুলো উঠে আসুক।  

সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে চট্টগ্রামে গণমাধ্যম কর্মীদের প্রশিক্ষণ কর্মশালার সমাপনী দিনে সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

দুর্নীতি বিরোধী অনুসন্ধানী প্রতিবেদন নিয়ে এই প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করে প্রেস ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ (পিআইবি) এবং জার্মানভিত্তিক বেসরকারী সংস্থা জিআইজেড।  

চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে ‍দুদক মহাপরিচালক আরও বলেন, দুর্নীতির চিত্র বড়ই বিচিত্র। দুর্নীতি প্রতিরোধে দুর্নীতি দমন কমিশনকে একাই পদক্ষেপ নিতে হচ্ছে।   তবে দুদকের একার পদক্ষেপ যথেষ্ট নয়।   আপনাদের লেখনীর মাধ্যমে আমাদের জানিয়ে দিতে হবে, সতর্ক করতে হবে।  

‘আপনারা আমাদের চোখ দিয়ে দেখিয়ে দিতে পারেন যে, এভাবে না, এভাবে হবে।   সবকিছু আমাদের সরকারি কর্মকর্তাদের মাথা থেকে আসবে, এটা হয়ত না-ও হতে পারে।   এতে দেশ, জাতি উপকৃত হবে, মানুষ ভোগান্তিমুক্ত হবে। ’

এর আগে প্রশিক্ষণার্থী গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে সরাসরি প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নেন দুদক মহাপরিচালক।  

তিনি বলেন, আমাদের দেশে ৭৩ শতাংশ দুর্নীতির অনুসন্ধান শুরু হয় বিভিন্ন পত্রিকার রিপোর্ট থেকে তথ্য নিয়ে।   বাকিগুলো ব্যক্তি কিংবা প্রতিষ্ঠানের অভিযোগ থেকে।   তবে এসব অভিযোগের অধিকাংশই বেনামে থাকে।   এতে তথ্যবিভ্রাট থাকে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মিডিয়া না হলে আমরা সেরকম সাহসী মানুষ পাচ্ছি না যারা বড় রাঘববোয়াল, শিল্পগ্রুপ কিংবা দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে আমাদের তথ্য দেবে।   এজন্য আমরা চাই মিডিয়ায় বেশি বেশি রিপোর্ট আসুক।

তবে দুর্নীতি ঘটে যাবার আগেই এই বিষয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের উপর জোর দেন দুদক মহাপরিচালক।   তিনি বলেন, দুর্নীতি হয়ে গেল, তারপর সংবাদ প্রকাশ হলে আমাদের তেমন সুবিধা হয় না।   তথ্য দিতে হবে ঘটনা ঘটে যাবার আগেই।   তাহলে দুদক ব্যবস্থা নিয়ে সেই দুর্নীতিটা প্রতিরোধ করতে পারবে।

সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক ড.আলী আর রাজি, চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মাসুকুর রহমান, জেষ্ঠ্য সাংবাদিক জুলফিকার আলী মানিক এবং চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শুকলাল দাশ।

প্রশিক্ষণ নেয়া সাংবাদিকদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন তারা টিভির চট্টগ্রাম বিভাগীয় প্রতিনিধি নিরুপম দাশগুপ্ত এবং বিডিনিউজটোয়েন্টিফোর.কমের ব্যুরো প্রধান মিন্টু চৌধুরী।  

এসময় দুদকের চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক আবু সাঈদ চৌধুরীও উপস্থিত ছিলেন।

২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে পাঁচদিনের এই প্রশিক্ষণ কর্মশালা শুরু হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১৭

আরডিজি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।