ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

বই মেলায় উপচেপড়া ভিড়, মধ্যমণি শিশুরা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০১৭
বই মেলায় উপচেপড়া ভিড়, মধ্যমণি শিশুরা বই মেলায় উপচেপড়া ভিড়, মধ্যমণি শিশুরা। ছবি: সোহেল সরওয়ার-বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

চট্টগ্রাম: দুপুরের দিকে ভিড় ছিল বয়সীদের, বিকেল নাগাদ বাড়তে থাকে শিশুদের আনাগোনা। সন্ধ্যা না গড়াতেই সব বয়সী মানুষের উপচেপড়া ভিড় দেখা গেল চট্টগ্রামের একুশে বই মেলায়।

সিটি কর্পোরেশনের আয়োজনে নগরীর ডিসি হিল ও মুসলিম হল প্রাঙ্গণে জমে উঠেছে একুশের বই মেলা। অমর একুশে ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ১০ দিনব্যাপী বইমেলার সপ্তম দিনে শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বইপ্রেমী বিভিন্ন বয়সের মানুষের ভিড় দেখা গেছে।

তবে শিশুদের আধিপত্য ও আনাগোনা ছিল একটু বেশি।

শিশু থেকে শুরু করে ষাটোর্ধ্ব বয়সী।

নতুন বইয়ের গন্ধ নেওয়ার আকুলতার কাছে ভিড়-ভাট্টা, হট্টগোল কোনো কিছুই বাধা হতে পারেনি। বিকেলের ক্লান্তি-অবসাদ সবকিছুকে ছাপিয়ে বইমেলায় প্রাণের কোলাহলে যোগ দিয়েছেন তারাও।

নগরীর মুসলিম হল প্রাঙ্গণে চট্টগ্রাম সৃজনশীল প্রকাশক পরিষদের অংশগ্রহণে মেলায় প্রায় ৪৫টি প্রকাশনা সংস্থা বই নিয়ে স্টল দিয়েছে। প্রকাশনাগুলো হচ্ছে কারেন্ট বুক সেন্টার, কথন প্রকাশন, নন্দন বই ঘর, প্রথমা প্রকাশনী, ফারুক প্রকাশনী ও শিশু মনন ইত্যাদি।  

মেলায় ‘ইতিহাস কথা কয়’ শিরোনামে ডকুমেন্টরি প্রকাশনী যেমন রয়েছে তেমনি শিশুদের জন্য রয়েছে বিভিন্ন শিশুসাহিত্য। এছাড়াও দুর্লভ প্রাচীন বই নিয়ে প্রদর্শনী স্টলও আছে মেলায়।

এর মধ্যে শিশু মনন স্টলে দেখা গেল শিশুদের ভিড়। কেউ কিনে নিচ্ছে মজার সব গল্পের বই আর কেউ হাসি-ঠাট্টা বিষয়ক বই।

‘আমি অনেক মজার গল্প জানি। ঈষপের গল্প আর শেয়ালের গল্প পড়ি। ভূতের গল্পও পড়ি। ’ মায়ের সঙ্গে মেলায় আসা দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী নীপা এভাবেই তার অভিব্যক্তি প্রকাশ করে।

মেলায় ডা. খাস্তগীর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী মাইশা আক্তার বাংলানিউজকে বলে, ‘আমি আম্মুর সাথে ছোটকাল থেকে মেলায় আসছি। তাই বই মেলা বললেই আম্মুর সাথে চলে আসি। এই যে চারটা গল্পের বই কিনলাম। ’

মেলার এক কোণায় কারেন্ট বুক সেন্টারের সামনে ‘দ্যা এক্টর ইন দ্যা হাউস’ শিরোনামে তুন ডা.মাহাথির মোহাম্মদের স্মৃতিকথা বইটি পড়ছিলেন ষাটোর্ধ্ব মো.জামাল উল্লাহ। কিছুক্ষণ পড়ার পর বইটি কিনে নেন তিনি।

খাদ্য বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো.জামাল উল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, ৭১ সালের আগে ও পরে মুসলিম হলে ক্লাব ছিল। সেখানে সব ধরনের বইয়ের কালেকশন ছিল। স্বাধীনতা যুদ্ধের পরও বেশ কয়েক বছর আমরা ক্লাবে এসে বই পড়তাম। কিন্তু কালক্রমে সেটি হারিয়ে যায়। তারপর থেকে আর আসা হয় না। তবে প্রতিবছর একুশে বই মেলায় ঘুরে বেড়াই। যেটি ভালো লাগে সেটি কিনে নিয়ে বাসায় পড়ি। বই মেলা বেশি বেশি হওয়া প্রয়োজন। কারণ অন্তত তরুণ বা শিশুরা এসে বই খুলে একটু দেখে একটি লাইন হলেও শিখবে।

মেলায় মিউনিসিপ্যাল মডেল হাউ স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী সাবিহা ইয়াছমিন জানায়, আম্মুর সাথে এসেছি কিছু মজার মজার গল্প কিনতে। ঈশপের গল্পের বই কিনেছি। এছাড়া বইমেলায় ঘুরতে বেশ ভাল লাগে। যেন প্রাণ-স্পন্দন ফিরে আসে।

এদিকে ঢাকার বাংলা একাডেমির মতো শিশুপ্রহর না থাকলেও মুসলিম হল প্রাঙ্গণ ও ডিসি হিলের একুশে বই মেলায় শিশুদের উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়।

২৫টিরও বেশি স্টল নিয়ে বসেছে ডিসি হিলের বই মেলা। এখানেও বইপ্রেমীরা ঘুরে ঘুরে পছন্দের বই সংগ্রহ করছেন এবং দেখছেন। তবে কয়েকজন বিক্রেতার সাথে কথা বলে জানা গেছে, ক্রেতার চেয়ে দর্শনার্থীর সংখ্যাই ছিল বেশি।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০১৭

জেইউ/আইএসএ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।