ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

নগরে শিবিরের মিছিল-সমাবেশ, সরকার উৎখাতের ঘোষণা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০১৭
নগরে শিবিরের মিছিল-সমাবেশ, সরকার উৎখাতের ঘোষণা শিবিরের প্রকাশ্য মিছিল (সংগঠনের পাঠানো)

চট্টগ্রাম: পুলিশের কঠোর নজরদারিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে নগরীতে আবারও প্রকাশ্যে মিছিল-সমাবেশ করেছে ধ্বংসাত্মক কর্মসূচি পালনের দায়ে অভিযুক্ত ছাত্র সংগঠন ছাত্রশিবির।  ওই মিছিল প্রতিরোধ করতে না পারলেও নগরীর দেওয়ান বাজার এলাকায় মিছিল করার জন্য রেকি করতে আসা ছাত্রশিবিরের এক নেতাকে আটক করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৭টার দিকে মো.শাহাদাৎ হোসেন (২১) নামে শিবিরের সাথী পর্যায়ের ওই নেতা নগর পুলিশের বিশেষ শাখার টিমের হাতে আটক হয়।   এরপর তাকে কোতয়ালি থানা পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হয়।

কোতয়ালি থানার ওসি জসিম উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, শাহাদাৎ শিবিরের সাথী।   চন্দনপুরার দারুল উলুম মাদ্রাসার ছাত্র।

  মাদ্রাসার ছাত্রাবাসে সে থাকে।   মাদ্রাসা থেকে বের হয়ে সে দেওয়ানবাজারে এসেছিল মিছিল করা যাবে কি-না দেখতে।   মোবাইলে কথাবার্তা শুনে পুলিশের সন্দেহ হলে তাকে আটক করা হয়।

শাহাদাৎ কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলার দুলাহাজরা পাগলার বিল গ্রামের সাবের আহম্মদের ছেলে।

এর আগে একই সময়ে একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে শিবির নগরীতে আরেকটি বড় আকারের মিছিল বের করে।   এতে প্রায় দুই শতাধিক নেতাকর্মী ছিল।

ছাত্রশিবিরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নগরীতে দুইভাগে বিভক্ত শিবিরের সাংগঠনিক কমিটির মধ্যে উত্তর শাখা এই মিছিল বের করে।   নগরীর রাহাত্তারপুল থেকে শুরু হওয়া মিছিলটি বহদ্দারহাটে গিয়ে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।   সমাবেশ থেকে সরকার উৎখাতের ঘোষণা দেয়া হয়েছে।

শিবির রাহাত্তারপুল থেকে বহদ্দারহাট পর্যন্ত মিছিল ও সমাবেশের কথা বললেও স্থানীয় বাকলিয়া থানার ওসি আবুল মনছুরের দাবি, তাদের বক্তব্য সঠিক নয়।

নিজস্ব সূত্রের বরাত দিয়ে ওসি আবুল মনছুর বাংলানিউজকে জানান, সিএনজি টেম্পু, অটোরিকশা এবং রিক্সায় করে শ’দুয়েক নেতাকর্মী এসে নূরনগর হাউজিং সোসাইটির সামনে জড়ো হয়।   এরপর সেখানে মিছিল-সমাবেশ করে।

নূরনগর হাউজিং সোসাইটি চান্দগাঁও থানা এলাকায়।   যোগাযোগ করা হলে চান্দগাঁও থানার ওসি সাইফুল আলম চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, শিবির মিছিল করতে পারে, নাশকতা করতে পারে এই ধরনের আগাম তথ্য আমরা পেয়েছিলাম।   এজন্য কঠোর নজরদারির নির্দেশনাও আমাদের দেয়া হয়েছিল।   ভোর ৪টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত আমাদের টিম পুরো এলাকায় ছিল।   কোন মিছিলের খবর তো আমরা পাইনি।

শিবির মিছিল করে নাশকতা ঘটাতে পারে, এমন আশংকায় নগর পুলিশের চার জোনের চারজন উপ কমিশনার মারফত ১৬ থানায় আগাম সতর্কবার্তা দেয়।   এর একদিন আগেই নগর পুলিশের বিশেষ শাখা থেকে সিএমপি কমিশনারকে এই বিষয়ে সতর্ক থাকার জন্য তথ্য দেয়া হয় বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।

তবে এত সতর্কবার্তার পরও ছাত্রশিবির কিভাগে নগরীতে আবারও প্রকাশ্যে মিছিল-সমাবেশ করতে পারল তা নিয়ে খোদ পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যেই বিস্ময়ের সৃষ্টি হয়েছে।

এর আগে গত ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে এবং ০৬ ফেব্রুয়ারি ৪০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে শিবির নগরীতে বড় ধরনের শোডাউন করে।   তখনও শিবিরের এই কর্মসূচি প্রতিরোধে পুলিশের কোন ভূমিকা ছিল না।  

বিজয় দিবস এবং প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ছাত্রশিবির শোডাউন করতে পারে এমন কোন আগাম সতর্কবার্তাও নগর পুলিশের বিশেষ শাখার কাছে ছিল না বলে তখন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়েছিল।

বাংলাদেশ সময়: ২১০১ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০১৭

আরডিজি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।