রোববার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ (এলএ) শাখায় গিয়ে কয়েকজন ভুক্তভোগীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাৎক্ষনিক ফাইল তলব করে তিনি এ নির্দেশনা দেন।
স্ট্যান্ডরিলিজ হওয়া ৩ জনই জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ শাখার চেইনম্যান হিসেবে কর্মরত।
সকাল ১১টা ৪০ মিনিটে ভূমি প্রতিমন্ত্রী মো. সাইফুজ্জামান চৌধুরী জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ (এলএ) শাখায় প্রবেশ করেন।
ভূমি প্রতিমন্ত্রীকে দেখেই সেখানে সেবা নিতে আসা মনছুর আলী নামের একজন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক বলে উঠলেন, ‘স্যার আমি কয়েকটি কথা বলতে চাই’ উত্তরে ভূমি প্রতিমন্ত্রী বলে উঠলেন ‘আমি আপনাদের সাথেই কথা বলতে ও শুনানি করতে এসেছি। কোন হয়রানির শিকার হচ্ছেন না তো?’
উত্তরে মনছুর আলী বলেন, ‘আমি গত এক বছর ধরে এখানে একটি ফাইল নিয়ে ঘুরছি। এক টেবিল থেকে আরেক টেবিলে ফাইল নিতে টাকা দিতে হয়। টাকা ছাড়া কোন ফাইল নড়ে না। ইতোমধ্যে ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা দিয়েছি। কিন্তু এখনও কাজ হয়নি। প্রথমে আইয়ুব নামের এক কর্মচারীর কাছে ফাইল ছিল। তাকে টাকা পয়সা দিয়ে ম্যানেজ করে বর্তমানে সৈকত চাকমা ও মোবারক নামের দুই কর্মচারীর কাছে আমার ফাইলটি আছে। ’
তখন পাশে থাকা সাইফুর নামের আরেক ভুক্তভোগী ভূমি প্রতিমন্ত্রীকে উদ্দেশ্যে করে বলেন ‘আমি মিস মামলার জন্য এ অফিসের কর্মচারী করিম ও নজরুলকে অনেক টাকা দিয়েছি। কিন্তু তবুও তারা আমার ফাইলটি আটকিয়ে রেখেছে। যতবার আসি ততবার টাকা দিতে হয় তাদের। গত ৭ মাস থেকে এ ফাইল নিয়ে ঘুরছি। কোন সুরাহা পাচ্ছি না। ’
তখন ভূমি প্রতিমন্ত্রী মো. সাইফুজ্জামান চৌধুরী ভুক্তভোগীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ফাইলগুলো আনতে জেলা প্রশাসনের এল এ শাখার ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা মো. নোমান হোসেনকে নির্দেশ দেন। নির্দেশনা অনুসারে তিনি ফাইলগুলো এনে ভূমি প্রতিমন্ত্রীকে দেখান। তাতে ভূমি প্রতিমন্ত্রী দীর্ঘদিন ফাইল আটকে থাকার সত্যতা পান।
তখন অভিযোগের প্রেক্ষিতে ভূমি প্রতিমন্ত্রী মো. সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এলএ শাখার চেইনম্যান আহমদ করিম, নজরুল ইসলাম ও মো. হানিফকে স্ট্যান্ডরিলিজ করার নির্দেশ দেন। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. আবদুল জলিলকে ওই তিন চেইনম্যানকে স্ট্যান্ডরিলিজ করার বিষয়টি তাকে নিশ্চিত করতে বলেন।
এ সময় উপস্থিত সাংবাদিকদের ভূমি প্রতিমন্ত্রী বলেন, ভূমি অফিসের গুটিকয়েক কর্মকর্তা-কর্মচারীর কারণে সাধারণ মানুষ হয়রানির শিকার হচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুসারে আমরা জনগণের দোড়গোড়ায় সেবা পৌঁছে দিতে কাজ করছি এবং ভূমি অফিসে এসে কেউ যাতে হয়রানি না হয়, সে লক্ষে কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া রয়েছে। ভূমি অফিসের কাউকে অনিয়ম ও দুর্নীতি করতে দেওয়া হবে না। ইতোমধ্যে কাজ শুরু হয়েছে অভিযুক্ত ৩ কর্মচারীকে চট্টগ্রামের বাইরে বদলির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সাধারণ মানুষ যাতে হয়রানি না হয় সে লক্ষে কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। আমি দুর্নীতির অবসান চাই এবং এ বিষয়ে আমি জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করবো। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৫২১ ঘন্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৭
এসবি/টিসি