শুক্রবার (২৭ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের ১ নম্বর বিছানায় শুয়ে কথাগুলো বললেন আরিফ (২৬)। বাকলিয়া থানাধীন দেওয়ান বাজারের ছয়তলা ভবনে রহস্যজনক বিস্ফোরণের পর তার শরীরের ২৫ শতাংশ পুড়ে গেছে।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সাদার্ন থেকে এমবিএ ডিগ্রি নিয়ে প্যাকেজিং ব্যবসা শুরু করেছিলেন আরিফ। আট বছর ধরে ওই বাসায় আছেন তারা।

আরিফ বলেন, বাবা-মা গতকাল রাত আটটার দিকে লোহাগাড়ার গ্রামের বাড়ি যান। এরপর আমরা রাতে খাওয়া-দাওয়া করে ঘুমাতে যাই। ভোররাতে এ দুর্ঘটনা ঘটল। পুরো ঘরের জিনিসপত্র পুড়ে কয়লা হয়ে গেছে। কাচের টুকরা ছড়িয়ে পড়েছে। বেশ কয়েকবার বিকট শব্দে আওয়াজ হয়েছে। আমি দ্রুত নিচে নেমে দারোয়ানকে ইলেকট্রিকের মেইন সুইচ বন্ধ করে দিতে বলি। এরপর এক বন্ধুকে নিয়ে দ্রুত ন্যাশনাল হসপিটালে যাই। তারা আমাকে বসতেও দেয়নি, চিকিৎসাসেবা দূরে থাক। দ্রুত এখানে চলে আসি।
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমাদের ঘরে গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করা হয় না। পাশের ঘরে প্রায় সবাই গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করেন। হয়তো পাশের ঘরে সিলিন্ডার বিস্ফোরণ কিংবা অন্য কোনো কারণে বিস্ফোরণ হতে পারে। আমাদের ঘরের সবাই ঘুমে থাকায় চুলা জ্বালানোরও প্রশ্নই আসে না। কী হয়েছিল আমি জানি না।
আরিফের বোন তনিমা আফরিন ইপ্তি কুসুম কুমারী সিটি করপোরেশন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষার্থী। শরীরের শতভাগ পুড়ে গেছে তার। তাকে দেখতে হাসপাতালে এসেছিলেন গৃহশিক্ষক নুরুল আবছার। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, সকালে পড়াতে গিয়ে দেখলাম ভয়াবহ অবস্থা। ছুটে এলাম হাসপাতালে। তিন বছর ধরে পড়াচ্ছি। এবার বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিত সে।
ইপ্তির বিছানার পাশে কান্নাকাটি করছেন মা নাসিমা আকতার। তিনি শুধু বলছিলেন, ‘আমার মাইয়া ঘুমিয়ে ছিল। আগুন আমার সর্বনাশ করে দিল। ’
** ছয়তলা ভবনে রহস্যজনক বিস্ফোরণ, আহত ৪
বাংলাদেশ সময়: ১২৩৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৭, ২০১৭
এআর/টিসি