চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে বন্দরে থাকা ২ হাজারের বেশি কন্টেইনার বিক্রির জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞাপন আহ্বান করতে পারে। কন্টেইনার বিক্রির সম্পূর্ণ অর্থ বন্দরের ফান্ডে দেওয়া হবে।
বন্দর সূত্রে জানা গেছে, দেউলিয়া হ্যানজিন শিপিং কোম্পানির ১ হাজার ৭০০ খালি কন্টেইনার চট্টগ্রাম বন্দরে রয়েছে। এছাড়া পণ্যবাহী ও রেফার কন্টেইনার রয়েছে অন্তত ৩ শতাধিক।
সূত্র জানায়, একদিকে বন্দরের বিপুল রাজস্ব অন্যদিকে ২ হাজার অতিরিক্ত কন্টেইনারের কারণে বাড়ছে কন্টেইনার জট। এ অবস্থায় অর্থ পরিশোধে অপরাগতা প্রকাশ করে হ্যানজিন শিপিং কোম্পানি। এর পরিপ্রেক্ষিতে করণীয় নির্ধারণে আদালতের মতামত চাওয়া হয়। আদালত চট্টগ্রাম বন্দরে থাকা কন্টেইনার নিলামে বিক্রি করে বন্দরের পাওনা টাকা পরিশোধের পক্ষে মতামত দেন। আদালতের মতামতের ভিত্তিতে কন্টেইনারগুলো নিলামে বিক্রির পদক্ষেপ নেয় বন্দর কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব ওমর ফারুক বাংলানিউজকে বলেন, বন্দরের পাওনা আদায়ে দেউলিয়া হ্যানজিন শিপিং কোম্পানিকে চিঠি দেওয়া হয়। তারা অর্থ আদায়ে অপারগতা প্রকাশ করায় আদালতের মতামত জানতে চায়। আদালত কন্টেইনার নিলামে বিক্রির পক্ষে মতামত দেয়। এর ভিত্তিতেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম বন্দরে হ্যানজিনের সবচেয়ে বেশি রয়েছে খালি কন্টেইনার। এছাড়া পণ্যবাহী ১৮২ টিইইউস এবং বেশ কিছু রেফার কন্টেইনার রয়েছে। এসব কন্টেইনার বিক্রি করে ১০ কোটি টাকা আদায় হবে। হ্যানজিন বাংলাদেশ সাত কোটি টাকা পরিশোধ করবে। এছাড়া চট্টগ্রাম বন্দরে আটক জাহাজ নিলামে বিক্রির উদ্যোগ নেওয়া হবে।
সূত্র জানায়, এরই মধ্যে কন্টেইনার নিলামে বিক্রির পক্ষে মতামত দিয়েছে আদালত। এজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। শিগগির পত্রিকায় বিজ্ঞাপন আহ্বান করা হবে। তবে আদালতের আদেশ এখনো বন্দর কর্তৃপক্ষের হাতে না পৌঁছায় নিলাম প্রক্রিয়া শুরু করা যাচ্ছে না।
দক্ষিণ কোরিয়ার শিপিং কম্পানি হ্যানজিন দেউলিয়ার কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বন্দরে কন্টেইনার নামতে দেওয়া হয়নি। এতে ওই কোম্পানির জাহাজ ও কন্টেইনারে পণ্য দিয়ে বিপাকে পড়ে আমদানি-রফতানিকারকরা। ফলে চট্টগ্রাম বন্দরে থাকা কন্টেইনার নিয়ে যেতে পারেনি প্রতিষ্ঠানটি।
গত বছরের ৩১ আগস্ট সিঙ্গাপুর আদালতে হ্যানজিন শিপিংয়ের দেউলিয়া হওয়ার আবেদন আদালতে জমার পর থেকে ৪ হাজার ১৩৭ একক পণ্যভর্তি কন্টেইনার সিঙ্গাপুর বন্দরে আটকা পড়েছিল। এরমধ্যে ব্যবসায়ীরা বেশিরভাগ কন্টেইনার অন্য কোম্পানির কন্টেইনারে স্থানান্তরের প্রক্রিয়া শুরু করে।
সিঙ্গাপুর বন্দর কর্তৃপক্ষ গত বছরের ১২ নভেম্বর হ্যানজিনের কন্টেইনার সরিয়ে নিতে একটি নোটিশ দিয়েছে। ২৮ নভেম্বরের মধ্যে এসব কন্টেইনার সরিয়ে না নিলে নিলামে তোলা হবে অথবা সেগুলো সরিয়ে ফেলে নিজেদের জিম্মায় নেওয়া হবে বলে নির্দেশনা জারি করে। একই পদ্ধতি অনুসরণ করছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫৩ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০১৭
এমইউ/টিসি