বুধবার (১৮ জানুয়ারি) সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে শুনানির পর মহানগর হাকিম মাসুদ পারভেজ তাদের জামিন মঞ্জুর করেছেন।
এর আগে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম সাহাদাৎ হোসেন ভূঁইয়া তাদের জামিন নামঞ্জুর করলে বিক্ষোভে নামেন আইনজীবীরা।
ঘটনার ছবি তুলতে গেলে কয়েকজন আইনজীবী বাংলানিউজের সিনিয়র ফটোকরেসপন্ডেন্ট উজ্জ্বল কান্তি ধরকে লাঞ্চিত করে ক্যামেরা কেড়ে নেয়।
জেষ্ঠ্য আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, আইনজীবীদের বিক্ষোভের পর সিএমএম আদালতে জামাল ও ইয়াছমিনের আবারও জামিনের আবেদন করা হয়। সিএমএম জামিন শুনানির জন্য মহানগর হাকিম মাসুদ পারভজকে দায়িত্ব দেন।
মহানগর আদালতের সহকারি পিপি অ্যাডভোকেট আবিদ হোসেন বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, মাসুদ পারভেজের এজলাসে জামিন শুনানিতে সিনিয়র আইনজীবীরা অংশ নিয়েছেন। পাঁচ মিনিটের শুনানি শেষে আদালত এক হাজার টাকার বন্ডে জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতির জিম্মায় দুজনের জামিন মঞ্জুর করেছেন।
এরপর আইনজীবীরা জামিন পাওয়া অ্যাডভোকেট জামাল হোসেনকে নিয়ে সিএমএম আদালতের বাইরে আনন্দ, উল্লাস করেন।
এর আগে ভাংচুরের পর আদালতে গিয়ে দেখা যায়, অতিরিক্ত মহানগর হাকিমের এজলাসের উপর জানালার কাচ ভাঙ্গা অবস্থায় আছে। ওই বিচারকের খাস কামরার জানালার কাচও ভাঙা অবস্থায় আছে। খাস কামরার ভেতরে স্টোনোর কক্ষে ভাঙা কাচের টুকরা পড়ে আছে।
ওই আদালতের এক কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, পতেঙ্গা থানার ফাইল শুনানি শেষ হওয়ার পর আইনজীবীদের বিশেষ অনুরোধে জামিনের আবেদনের উপর শুনানি শুরু হয়। আসামির পক্ষে প্রায় দেড়শ আইনজীবী শুনানিতে অংশ নেন। জামিন নামঞ্জুরের পর আইনজীবীরা চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করলে বিচারক খাস কামরায় চলে যান। এসময় পাথরের আঘাতে এজলাসে বিচারকের চেয়ারের উপরের কাঁচ ভেঙ্গে যায়।
বিকেলে ঘটনাস্থলে গিয়ে আরও দেখা গেছে, সিএমএম এবং অতিরিক্ত সিএমএম’র আদালতের সামনে অবস্থান নিয়ে কয়েকশ আইনজীবী মিছিল করে এবং স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ করছেন। স্লোগানে তারা অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিমের অপসারণ দাবি করেন।
অ্যাডভোকেট ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, আইনজীবী এবং তার স্ত্রীর নাম মামলার এজাহারে ছিল না। এরপরও ফরোয়ার্ডিংয়ে তাদের নাম উল্লেখ করে রিমান্ডের আবেদন পাঠানো হয়। আদালত রিমান্ড এবং জামিন নামঞ্জুর করেছেন। জামিন নামঞ্জুর হওয়ায় আদালতে বিক্ষোভ করেছেন আইনজীবীরা।
রোজিনা (১৮) নামে মিয়ানমারের এক তরুনীকে সৌদিআরবে পাচারে সহায়তার অভিযোগে মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম শাহ আমানত আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দর থেকে সস্ত্রীক ওই আইনজীবীকে গ্রেফতার করা হয়। রোজিনা এবং ফজলুল কাদের এয়ার এরাবিয়ার ফ্লাইটে যাবার জন্য ইমিগ্রেশনে হাজির হলে তাদের আটকে দেয় পুলিশ। তাদের সঙ্গে যাওয়া জামাল ও তার স্ত্রীকেও আটক করা হয়।
রাতে চারজনকে নগরীর পতেঙ্গা থানায় সোপর্দ করা হয়। এরপর ইমিগ্রেশন পুলিশের এস আই মো.শহীদুল ইসলাম বাদি হয়ে নগরীর পতেঙ্গা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার এজাহারে রোজিনা ও ফজলুল কাদের এবং হানিফ নামে এক দালালকে আসামি করা হয়।
তবে বুধবার চার আসামিকে আদালতে পাঠানোর সময় জামাল ও তার স্ত্রীকেও এই মামলায় পাঁচদিনের রিমান্ডে নেয়ার আবেদন জানান তদন্তকারী কর্মকর্তা পতেঙ্গা থানার এস আই প্রকাশ প্রণয় দে। তাদের বিরুদ্ধে রোজিনাকে সৌদিআরবে পাচারের জন্য শাহ আমানত বিমানবন্দরে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ আনা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০১৭
আরডিজি/টিসি