ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

‘এমপি সাহেবরা বড় ব্যবসায়ী হলে কর আদায় কঠিন হয়ে যায়’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৭, ২০১৭
‘এমপি সাহেবরা বড় ব্যবসায়ী হলে কর আদায় কঠিন হয়ে যায়’ দুর্নীতিমুক্ত সরকারি সেবা প্রদান সংক্রান্ত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে দিচ্ছেন দুদক কমিশনার ড. নাসিরউদ্দীন আহমেদ। ছবি : সোহেল সরওয়ার। বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

চট্টগ্রাম: দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কমিশনার ড. নাসিরউদ্দীন আহমেদ উদাহরণ দিতে গিয়ে বলেছেন, ‘কর কি ধার্য করা হবে তা সংসদে নির্ধারণ হয়।  কিন্তু আমি তো দেখেছি, টু বি ডিফিকাল্ট। অনেক ট্যাক্স আমরা আদায় করতে চেয়েছি। দেখেছি অনেক কমপ্লিক্টটিক্যাল ইনসুরেন্স থাকে। এমপি (সাংসদ) সাহেবরা যদি বড় ব্যবসায়ী -শিল্পপতি হয়ে যায়, তখন তো কর আদায় করা ডিফিকাল্ট (কঠিন)।’

মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) রাতে নগরীর সার্কিট হাউসে ‘দুর্নীতিমুক্ত সরকারি সেবা প্রদান সংক্রান্ত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে দিতে গিয়ে এ কথা বলেন  দুদক কমিশনার।

জেলা প্রশাসক মো. সামসুল আরেফিনের সভাপতিত্বে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।

  সভায় পুলিশ সুপার নুরে আলম মিনা ও দুদকের কর্মকর্তারাসহ চট্টগ্রামের বিভিন্ন সরকারি কার্যালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।  

দুদক কমিশনার ডিজিটাল পর্দায় দুদকের বিভিন্ন কার্যক্রমের প্রামাণ্যচিত্র তুলে ধরেন।

  সেই প্রামাণ্যচিত্র তুলে ধরার সময় তিনি বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন।

তিনি জীবনানন্দ দাশের ‘অদ্ভুত আঁধার এক এসেছে এ পৃথিবীতে আজ’ কবিতার মধ্যে দিয়ে প্রামাণ্যচিত্র দেখানো শুরু করেন দুদক কমিশনার।

এরপর বক্তব্যে দিতে গিয়ে ড. নাসিরউদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘গত অর্থবছরে বাংলাদেশে ৭ এর উপর প্রবৃদ্ধি অর্জন হয়েছে। যা খুবই ভালো। আমরা আসা করছি আগামীতেও একই ধারা অব্যাহত থাকবে।   আমরা এর মাধ্যমে উন্নত বিশ্বের দিকে এগোচ্ছি। ’

তিনি বলেন, উন্নয়নের সাফল্যের পেছনে সামষ্ট্রিক অর্থনীতি গুরুত্বপূর্ণ, তবে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে  পারি তাহলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি পাবে এবং উন্নয়নের দিকেও এগিয়ে যাবে। ’

ড. নাসিরউদ্দীন আহমেদ  বলেন, দুর্নীতি প্রতিরোধে আমরা সারাদেশে ৩৮টি গণশুমারি করেছি।  সর্বশেষ মঙ্গলবার সন্দ্বীপে করেছি।  আমরা প্রত্যান্ত অঞ্চলগুলো বেছে নিচ্ছি, কারণ দ্বীপাঞ্চলগুলো খুবই খারাপ পর্যায়ে আছে।   সন্দ্বীপে গিয়ে অভিযোগ পেলাম সেখানকার সাব রেজিস্ট্রার সীতাকুণ্ডে বসে কাগজে সঁই করেন।   তার তো সপ্তাহে দুবার সেখানে যাবার কথা।  আমরা বিষয়টি আমলে নিয়েছি।   এটি তদন্ত হবে। ’

সেবা পেতে সরকারি অফিসে ঠেলা গাড়ির মতো ধাক্কা দিতে হয় মন্তব্য করে সাবেক এই সচিব বলেন, সরকারি অফিসে ধাক্কা দিতে হয়।  ঠেলা গাড়ির মতো একটু ধাক্কা দিলেই কিছুটা এগোই।   আবার থেমে যায়। আবার ধাক্কা দিলে একটু যায়।   এভাবে হলে হবে না। প্রত্যোকটি সরকারি অফিসকে টিম হিসেবে কাজ করতে হবে।   জনগণের কাছে যেতে হবে।

সরকারি অফিসগুলোতে ‘হাসিমুখ পাওয়া যায় না’  মন্তব্য করে দুদক কমিশনার মজা করে বলেন, ‘জনগণের ট্যাক্টে আমরা বেতন পাই। আমিও অনেকদিন সচিবালয়ে ছিলাম।  সেবা পেতে গিয়ে সেখানে হাসিমুখ তো নেইয়ই, কথাও বলেন না অনেকে।  সরকারি অফিসগুলোতেও হাসিমুখ পাওয়া যায় না। এটা পাল্টাতে হবে। ’

বিভিন্ন সরকারি কার্যালয়ে দরজা খুললেই টাকা দিতে হয় মন্তব্য করে তিনি বলেন, পার্সপোর্টসহ বিভিন্ন কার্যালয়ে দালালদের দৌরাত্ম বেড়েছে। তাদের চিহ্নিত করতে হবে।

তিনি সরকারি সেবা প্রদানে কর্মকর্তাদের মোবাইল অ্যাপস প্রযুক্তির প্রতি মনোযোগ দেওয়ার পরামর্শ দিয়ে কর্মকর্তাদের বলেন, একজন গ্রামের মানুষ আপনার কাছে সেবা চাইতে আসলো।   তার কাজ শেষ হলে আপনি তাকে একটি ছোট্ট ম্যাসেজ দিয়ে জানান।   এতে তার ভোগান্তি কমবে। নির্দিষ্ট দিনে এসে তার কাগজপত্র সংগ্রহ করতে পারবে। ’

মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন সরকারি অফিসের কর্মকর্তারা তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন।   পাশাপাশি তারা বিভিন্ন পরামর্শও দেন।

বাংলাদেশ সময়: ২১৪৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৭, ২০১৭

টিএইচ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।