ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

এমবিবিএস ডিগ্রি নিয়ে কী করবো!

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৩৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৭, ২০১৭
এমবিবিএস ডিগ্রি নিয়ে কী করবো! বিএমডিসি নিবন্ধনের দাবিতে বিক্ষোভ করে ইউএসটিসির শিক্ষার্থীরা। ছবি: সোহেল সরওয়ার, বাংলানিউজ

চট্টগ্রাম: বাবা-মায়ের কষ্টার্জিত টাকা আমার পেছনে উৎসর্গ করেছেন। তাদের স্বপ্ন ছিল মেয়েকে ডাক্তার বানাবেন। ২৩ জানুয়ারি এমবিবিএস ফাইনাল পরীক্ষা শুরুর কথা ছিল। কিন্তু বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) নিবন্ধন ছাড়া ওই ডিগ্রি নিয়ে আমি কী করব। প্র্যাকটিস তো করতে পারব না।

মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) বিকেলে ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি চিটাগাং (ইউএসটিসি) ক্যাম্পাসে বাকরুদ্ধ কণ্ঠে এ কথাগুলোই বললেন ২৫তম ব্যাচের এক ছাত্রী।

চূড়ান্ত পরীক্ষার কয়েক সপ্তাহ আগে কেন নিবন্ধনের বিষয়টি উঠল জানতে চাইলে ওই ছাত্রী বলেন, আমরা দ্বিতীয় বর্ষ থেকেই বিষয়টি নিয়ে শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলেছি।

তারা আশ্বাস দিয়েছেন তৃতীয় বর্ষে উঠলে নিবন্ধন হবে। আমরা আস্থা রেখেছিলাম।
এভাবে বারবার সময়ক্ষেপণ করা হয়েছে। শুধু আমরা নই ২৫-২৭ ব্যাচের এক হাজারের বেশি শিক্ষার্থীর বিএমডিসি নিবন্ধন হয়নি। অথচ এর পরের ব্যাচগুলোর জুনিয়র শিক্ষার্থীদের বিএমডিসি নিবন্ধন আছে। বিএমডিসি নিবন্ধন ছাড়া এমবিবিএস ফাইনাল পরীক্ষা দিলে পরে আমাদের আবার পরীক্ষাটি দিতে হতে পারে। আবার সময়ক্ষেপণ হবে। সবচেয়ে বড় কথা, আমাদের অভিভাবকরা কী ভাবছে? বিদেশি সহপাঠীরা এদেশ সম্পর্কে কী ভাবছে?ইটের টুকরা খেয়ে ফেলেছে শিশুটি, ইউএসটিসিতে আন্দোলন দেখে ফিরে যাচ্ছেন মা।

তিনি জানান, ১৪ লাখ টাকা দিয়ে ভর্তি হয়েছিলাম পাঁচ বছর আগে। প্রতি মাসে ৬ হাজার টাকা করে মাসিক ফি, ৩০ হাজার টাকা করে বার্ষিক ফি দিয়েছি। বিদেশি শিক্ষার্থীদের মাসিক ফি ১৪ হাজার টাকা। অন্যান্য ফি-ও বেশি।

যথারীতি ইউএসটিসির প্রশাসনিক ভবনের মূল ফটকে তালা লাগিয়ে আন্দোলন করছেন তিন ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। ক্যাম্পাসের মূল ফটকে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন তারা। মিছিল ও স্লোগান দেন তারা। আন্দোলনের অংশ হিসেবে হাসপাতালের জরুরি বিভাগ ছাড়া সাধারণ রোগীদের চিকিৎসাসেবা কার্যত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

দুপুরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন ইউএসটিসির বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের প্রধান ডা. মু. বদিউল আলম বাদল। তিনি শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি শিক্ষকদের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে জানিয়ে বলেন, এখানে সাংবাদিকরা আছেন। তারা যা দেখেন তা-ই প্রচার করেন। তাই তোমাদের আন্দোলনকে যৌক্তিক পরিণতির দিকে নিয়ে যেতে হলে হাসপাতালের জরুরি বিভাগ বন্ধ করে দেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। হাসপাতালের রোগীদের অ্যাম্বুল্যান্স ডেকে বের করে দেওয়া হলো। অনেক রোগীর চিকিৎসাসেবা বাবদ হাসপাতালের পাওনা বাকি ছিল। অনেক রোগী ছাড়পত্রের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত ছিল না।

তিনি বলেন, ঢাকায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং বিএমডিসিতে আমাদের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ নিবন্ধন বিষয়ে যোগাযোগ করছেন। প্রতিদিনের যে আপডেট থাকবে তা বেলা সাড়ে ১১টা থেকে ১২টার মধ্যে ক্যাম্পাসে উপস্থিত শিক্ষার্থীদের ব্রিফিং করা হবে।   যথারীতি প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলছে।  মোতায়েন রয়েছে পুলিশ।  

মিডিয়াকে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা না বলা সত্ত্বেও আমাকে উদ্ধৃত করে সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে, যা দুঃখজনক। মিডিয়ায় সাক্ষাৎকার দেওয়ার এখতিয়ার আমার নেই।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৭, ২০১৭

এআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।