ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

আইএসও সনদ পেল ন্যাশনাল মেরিটাইম ইনস্টিটিউট

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৩ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০১৪
আইএসও সনদ পেল ন্যাশনাল মেরিটাইম ইনস্টিটিউট ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

চট্টগ্রাম: আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের স্বীকৃতি পেয়েছে বাংলাদেশে সাধারণ নাবিকদের একমাত্র সরকারি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ন্যাশনাল মেরিটাইম ইনস্টিটিউট (এনএমআই)।

মঙ্গলবার প্রতিষ্ঠানের সভাকক্ষে আনুষ্ঠানিকভাবে এই সনদ তুলে দেওয়া হয়।

  আন্তর্জাতিক মান নির্ণয়কারী সংস্থা ‘ডিএনভি-জিএল’ বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার মাসুদ করিমের হাত থেকে আইএসও ৯০০১:২০০৮ সনদ গ্রহণ করেন নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম।

একই অনুষ্ঠানে ব্যুরো ভেরিটার্স (বিভি) প্রদত্ত ডব্লিউপিএস সনদ প্রদান করা হয়।
সংস্থার কান্ট্রি ম্যানেজার হারুন-অর-রশিদের কাছ থেকে সনদ গ্রহণ করেন সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমডোর এম জাকিউর রহমান ভূঁইয়া।

আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সনদ অর্জনের বিষয়ে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, নাবিকদের এই পেশা কেবল বাংলাদেশে সীমাবদ্ধ নয়। নির্দিষ্ট নিয়ম ও বাধ্যবাধকতার মধ্যে কাজ করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নাবিকদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে হয়।

বিশ্বের অন্যান্য দেশের নাবিকদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় এই সনদ সহায়ক ভূমিকা পালন করবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আইএমও শর্ত অনুযায়ী এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে সবকিছুই আছে। তাই এখান থেকে প্রশিক্ষণ নেওয়া নাবিকরা সনদের সুফল পাবে।

বিশ্ব মন্দার কারণে জাহাজ ব্যবসায় ধস নামায় গত কয়েক বছর নাবিকদের চাকরির বাজার সংকুচিত হয়ে পড়লেও সেই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসায় আবারও আন্তর্জাতিক বাজারে নাবিকদের চাহিদা বাড়ছে বলে জানান তিনি।

বর্তমানে আধুনিক ও প্রযুক্তি নির্ভর জাহাজ তৈরি হওয়াতে দক্ষতা না থাকলে নাবিকদের টিকে থাকা কঠিন হবে বলে উল্লেখ করেন নৌ-সচিব।

এনএমআই আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সনদ পাওয়ায় প্রত্যাশা আরো বাড়িয়ে দিয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, মান ধরে রেখে সুনাম অক্ষুন্ন রাখতে পারলে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা লাভবান হবে।  

সনদ প্রাপ্তি সম্পর্কে ‘ডিএনভি-জিএল’ বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার মাসুদ করিম বলেন, এই সনদ পাওয়ার কারণে বিশ্বে নাবিক নিয়োগকারী সব সংস্থার কাছে এনএমআই যোগ্য হিসেবে বিবেচিত হবে।

মান সম্পন্ন প্রশিক্ষণ প্রদানের কারণে সনদ প্রদান করলেও এ মান রক্ষা হচ্ছে কিনা তা প্রতিবছর সার্ভে করা হবে বলে জানান তিনি।

এনএমআই উন্নয়ন ও বিশ্বে নাবিকদের বাজার সৃষ্টিতে সরকারি নানা উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ ক্যাপ্টেন ফয়সাল আজিম।

ইনস্টিটিউটে প্রশিক্ষণার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি করে ২ ব্যাচে ৩০০ জনে উন্নীত করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, প্রশিক্ষণার্থীদের সুষ্ঠু আবাসনের জন্য ৬তলা বিশিষ্ট হোষ্টেল ভবন নির্মাণের কাজ শিগগির  শুরু হবে।

তিনি জানান, ন্যাশনাল মেরিটাইম ইনস্টিটিউটে ডিজিটালাইজেশনের কার্যক্রম দ্রুত এগিয়ে চলছে। এরইমধ্যে প্রতিষ্ঠানের ওয়েব সাইট চালু করে অনলাইনে দরখাস্ত বিতরণ করা হচ্ছে এবং পুরো ক্যাম্পাসে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা স্থাপন করে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

আগামী ব্যাচ থেকে ন্যাশনাল মেরিটাইম ইনস্টিটিউটের প্রি-সি কোর্সের প্রার্থীদের অনলাইনে ফরম পূরণ, দাখিল, ফি প্রদান ও প্রবেশপত্র প্রাপ্তি (ওয়ান ষ্টপ সার্ভিস) চালুর কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

এরআগে সকাল ১০টায় এনএমআই ১৩তম ব্যাচের প্রশিক্ষণার্থীদের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমডোর এম জাকিউর রহমান ভূঁইয়া বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

মো. সাঈদ উল্লাহর পরিচালনায় প্যারেড কমান্ডার চিফ প্লাটুন লিডার মো. আবদুল কাদের জুয়েল এর নেতৃত্বে কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়। ১৭৮ জন প্রশিক্ষণার্থী এই কুচকাওয়াজে অংশ গ্রহণ করেন।

প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত রেটিংসদের (নাবিক) মধ্যে ডেক বিভাগে মো. ইনজামামুল হক তুষার, ইঞ্জিন বিভাগে সিয়াম মাহমুদ, ইলেকট্রিক্যাল বিভাগের মো. সিরাজুল ইসলাম, ফিটার-কাম-ওয়েল্ডার বিভাগে মিঠু দাশ, ষ্টুয়ার্ড বিভাগে মো. রবিউল হক পাটোয়ারী, কুক বিভাগে মো. সাইফুল আজিম এবং  গ্রাউন্ড ড্রিলস বিভাগের মো. আবদুল কাদের জুয়েল শ্রেষ্ঠ প্রশিক্ষণার্থী নির্বাচিত হন। অল রাউন্ডার স্বর্ন পদক পেয়েছেন মো. ইনজামামুল হক তুষার।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে ব্যুরো ভেরিটাসের কান্ট্রি ম্যানেজার হারুন-অর-রশিদ,বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের এমডি কমডোর মুকসুমুল কাদের, নৌ-বাণিজ্য ‍অধিদপ্তরের প্রিন্সিপাল ‍অফিসার শফিকুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০১৪ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।