চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামের বিভিন্ন রাজনৈতিক-সামাজিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের মানুষের ফুলেল শ্রদ্ধায় বিদায় নিয়েছেন বৃটিশবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক, ভাষা সৈনিক, আমৃত্যু বিপ্লবী কমরেড প্রণতি দস্তিদার।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্রয়াত এ নেত্রীর মরদেহ শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য রাখা হয়।
শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতারা বলেন, প্রণতি দস্তিদার বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও বাম আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিলেন।
শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষে থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন কেন্দ্রীয় সদস্য হাজী বশিরুল আলম, ওয়ার্কার্স পার্টির চট্টগ্রাম জেলার পক্ষে জেলা সভাপতি অ্যাডভোকেট আবু হানিফ, জেলা সদস্য নুরুল ইসলাম, ইন্দ্র কুমার নাথ, আবু সৈয়দ বলাই, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির পক্ষে জেলা সাধারণ সম্পাদক মো.শাহআলম, অমৃত বড়ুয়া, চট্টগ্রাম কলেজের অধ্যক্ষ শেখর দস্তিদার, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির পক্ষে জেলা সভাপতি রাজা মিয়া ও জেলা সদস্য লুৎফুন্নেছা আখি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) পক্ষে মহিম উদ্দিন, গণসংহতি আন্দোলনের পক্ষে জেলা সমন্বয়ক হাসান মারুফ রুমি, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের পক্ষে চট্টগ্রামের সমন্বয়ক এডভোকেট ভুলন ভোমিক, শ্রমিক নেতা সিদ্দিকুল ইসলাম, ভাসানী অনুসারী পরিষদের পক্ষে আব্দুল গাফ্ফার খান, ন্যাপের পক্ষে আব্দুল হাকিম ও ওবায়দুল হক কায়েস, চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবি সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আখতার কবির চৌধুরী, মহিলা পরিষদ নেত্রী নুরজাহান খান, গণতন্ত্রী পার্টির সহ সভাপতি স্বপন সেন, বাংলাদেশ যুব মৈত্রী চট্টগ্রাম জেলার পক্ষে জেলা সভাপতি শরীফ চৌহান, সাধারণ সম্পাদক কায়সার আলম, বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রী চট্টগ্রাম জেলার পক্ষে সভাপতি ফারুক আহমেদ রুবেল, সহ-সভাপতি শিবলী সাদিক ও সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুদ্দিন সুজন।
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে নগরীর বলুয়ার দীঘি মহাশ্মশানে তার শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হয়।
বিপ্লবী প্রণতি দস্তিদার ১৯৩১ সালের ৭ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় খ্যাতিমান আইনজীবী নগেন্দ্র কুমার দাশের ঘরে জন্ম নেন। বাবা স্বদেশী আন্দোলন সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত থাকায় শৈশবেই প্রণতি বৃটিশবিরোধী সংগ্রামের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন প্রণতি।
তৎকালীন অনগ্রসর সমাজে নিজ উদ্যোগে এইচএসসি পাশ প্রণতি ১৯৫১ সালের ২৩ ডিসেম্বর শরবিন্দু দস্তিদারের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়ের পর তার জীবনে রাজনৈতিক বড় ধরনের পট পরিবর্তন হয়। স্বামীর অনুপ্রেরনায় তিনি প্রায় সার্বক্ষণিক রাজনৈতিক কর্মীতে পরিণত হন। রাজনৈতিক জীবনে প্রণতি দস্তিদার কয়েক দফা কারাগারে যান। বিভিন্ন সময়ে নির্যাতনেরও শিকার হন তিনি। ১৯৭১ সালে নিজের পরিচয় গোপন রেখে তিনি মুক্তিসংগ্রামের সংগঠক হিসেবে ভূমিকা পালন করেন।
বুধবার দুপুর ১২টা ৫৪ মিনিটে এই মহিয়সী নারী চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন।
আগামী ২৭ মে কমিউনিস্ট পার্টির চট্টগ্রাম জেলা শাখার কার্যালয়ে বিপ্লবী প্রণতি দস্তিদারের শোকসভার প্রস্তুতি কমিটি গঠনে এক সভা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন যুব মৈত্রীর সাধারণ সম্পাদক কায়সার আলম।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪১ ঘণ্টা, মে ২২,২০১৪