চট্টগ্রাম: নানা কারণে আলোচিত চট্টগ্রাম বন্দরের কর্ণফুলী ক্যাপিটাল ড্রেজিং এর কাজ সম্পন্ন করে আগামী এক বছরের মধ্যে এ প্রকল্পের উদ্বোধন করা হবে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল নিজাম উদ্দিন আহমেদ।
এছাড়া বহুল আলোচিত কর্ণফুলী কন্টেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) আগামী দেড় বছরের মধ্যে পুরোপুরি অপারেশনে যেতে সক্ষম হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
শুক্রবার দুপুরে চট্টগ্রাম বন্দর প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে সংবাদ সম্মেলন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবারে এসব তথ্য জানান বন্দর চেয়ারম্যান। অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র খ্যাত চট্টগ্রাম বন্দরের ১২৭ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম বন্দরে সাম্প্রতিক সময়ে গৃহিত নানা কার্যক্রম, জাহাজের গড় অবস্থানকাল, জাহাজ সংখ্যা, কার্গো ও কন্টেইনার হ্যান্ডলিং, বন্দর উন্নয়ন কার্যক্রমের চিত্র তুলে ধরা হয়। পাশাপাশি আগামী পাঁচ বছরের কর্ম পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়।
লিখিত বক্তব্যে বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, ‘ব্যাংক প্রটেকশন ও জেটি ফ্যাসিলিটিজসহ কর্ণফুলী ক্যাপিটাল ড্রেজিং প্রকল্পটি’ বাস্তবায়নে মালয়েশিয়ান মেরিটাইম এন্ড ড্রেজিং কর্পোরেশনের সঙ্গে ২০১১ সালে ২৮ এপ্রিল চুক্তি করা হয়।
চুক্তি অনুযায়ী ২০১৩ সালের ২ জানুয়ারি প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু চলতি বছরের ফ্রেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রকল্পের কাজ হয়েছে ৭৯ দশমিক ৭৮ শতাংশ। এরপর ২০১৩ সালের ১১ অগাস্ট চুক্তি বাতিলের নোটিশ দেওয়া হলে বাকি কাজ চলতি বছরের এপ্রিলের মধ্যে শেষ করবে জানিয়ে ২৯ অক্টোবর সংশোধিত সময়সূচি দাখিল করে।
চেয়ারম্যান জানান, ঠিকাদারের কাজের অগ্রগতি না হওয়াতে পাঁচ কোটি টাকা লিকুইডিটি ড্যামেজ আরোপ করা হয়। এতেও কোন কাজ হয়নি। ফলে বাকি কাজ সম্পন্ন করতে ঠিকাদারের সাথে চুক্তি বাতিল করে নতুন ঠিকাদার নিয়োগের জন্য গত ৫ মার্চ নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ে অনুমোদন চাওয়া হয়েছে।
চুক্তি অনুযায়ী কোন বাংলাদেশি সংস্থাকে প্রকল্পের কাজ দেওয়ার নিয়ম না থাকলেও মালয়েশিয়ান মেরিটাইম এন্ড ড্রেজিং কর্পোরেশন দিয়েছে। ফলে ড্রেজিং কাজ পিছিয়ে পড়েছে।
অপারেশনে যাবে এনসিটি:
চট্টগ্রাম বন্দরের বহুল আলোচিত এনসিটি টার্মিনাল বর্তমানে ৩৫ শতাংশ ব্যবহার হচ্ছে জানিয়ে বন্দর চেয়ারম্যান বলেছেন, দেড় বছরের মধ্যে পুরোপুরি অপারেশনে যাবে এ টার্মিনাল।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, গুরুত্বপূর্ণ টার্মিনালটি বেসরকারি খাতে দেওয়ার জন্য টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছিল। কিন্তু টেন্ডার অংশ গ্রহণ নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়। যা উচ্চ আদালত পর্যন্ত গড়ায়। ফলে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ক্রয় করে এ টার্মিনাল অপারেট করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
চেয়ারম্যান জানান, বন্দরের অর্থায়নে গড়ে তোলা ১ কিলোমিটার দীর্ঘ এনসিটি টার্মিনালে এক সঙ্গে পাঁচটি জাহাজ অপারেট করা যাবে। এতে বন্দরের হ্যান্ডলিং ক্যাপাসিটি দ্বিগুণ হয়ে যাবে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আলাউদ্দিন, চট্টগ্রাম বন্দরের সদস্য এম শাহ জাহান, ক্যাপ্টেন জুলফিকার, নজরুল ইসলাম, আব্দুল হান্নান শেখ, পরিচালক (পরিবহন) গোলাম সারওয়ার, পরিচালক(নিরাপত্তা) লে. কর্নেল মোয়াজ্জেম হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়:১৬২৪ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০১৪