ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

উৎসবের আমেজ, আছে শংকাও

চট্টগ্রামের সাত উপজেলায় ভোট রোববার

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০৩ ঘণ্টা, মার্চ ২২, ২০১৪
চট্টগ্রামের সাত উপজেলায় ভোট রোববার

চট্টগ্রাম: চতুর্থ দফা নির্বাচনে রোববার চট্টগ্রামের সাত উপজেলায় রোববার ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। উৎসবের আমেজে শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে সর্বাত্মক প্রস্তুতি।

তৃতীয় দফা নির্বাচনে সীতাকুণ্ড ও চন্দনাইশে বিচ্ছিন্ন সংঘাতের ঘটনা ঘটায় এবার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বাড়তি সতর্কাবস্থায় রাখা হয়েছে।

তবে এরপরও বিরোধী দল সমর্থিত প্রার্থী, তাদের সমর্থক এবং সাধারণ ভোটারদের মধ্যে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে কিছুটা শংকা আছে।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান নেতাকর্মীদের ভোটকেন্দ্র পাহারা দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

উপজেলাগুলো হচ্ছে, বোয়ালখালী, আনোয়ারা, সাতকানিয়া, বাঁশখালী, রাউজান, রাঙ্গুনিয়া এবং ফটিকছড়ি।

প্রায় এক মাস ধরে প্রচার-প্রচারণা শেষ হয়েছে শুক্রবার রাত ১২টায়। প্রচারণার শেষ দিনে শুক্রবার এসব উপজেলার গ্রামগুলো নানা ধরনের শ্লোগান আর আলাপচারিতায় মুখর ছিল। শেষদিনের প্রচারণাও ছিল একেবারে শান্তিপূর্ণ।

প্রচারণার মত ভোটগ্রহণও যাতে অবাধ, সুষ্ঠু হয় সেজন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় আছে জানিয়েছেন চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার (এসপি) এ কে এম হাফিজ আক্তার।

এসপি বাংলানিউজকে জানান, সাত উপজেলায় পুলিশ, আনসারসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রায় ১২ হাজার সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন। ইতোমধ্যে তারা সংশ্লিষ্ট উপজেলায় পৌঁছে গেছেন। নির্বাচনী সরঞ্জাম নিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য এবং নির্বাচনী কর্মকর্তারা শনিবার দুপুর থেকেই কেন্দ্রে কেন্দ্রে যাচ্ছেন।

পুলিশ সূত্রে ‍জানা গেছে, প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে পুলিশ ও আনসারের সমন্বয়ে ১৮ জন করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়া তিন ভোটকেন্দ্র মিলিয়ে থাকছে একটি করে পেট্রল টিম। থানায় অবস্থান করবে প্রায় এক’শ রিজার্ভ ফোর্স।

সেনাবাহিনী ও বিজিবি সদস্যরা স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে ভোটকেন্দ্রের বাইরে এলাকায় টহল দেবে বলে সূত্র জানিয়েছে।

জেলা নির্বাচন অফিসার খোরশেদ আলম জানান, চট্টগ্রামের সাত উপজেলার ৬৬৬ টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণের জন্য ১৪ হাজার ২২৭ জন ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এদের মধ্যে সাত’শ জন প্রিসাইডিং অফিসার, ৪ হাজার ৫২৯ জন সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার এবং ৯ হাজার ৯৮ জন পোলিং অফিসার।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সাত উপজেলায় মোট ১০২ জন চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী আগামীকালের ভোট যুদ্ধে জয়ের অপেক্ষায় আছেন। এদের মধ্যে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৩১ জন প্রার্থী। পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪৬ জন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২৫ জন প্রার্থী আছেন।

বোয়ালখালী
বোয়ালখালী উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ সমর্থিত মো.আতাউল হক (মোটর সাইকেল) এবং বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী বদরুছ মেহেরের (টেলিফোন) মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে।

বোয়ালখালীতে মোট ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ৭৭টি। এ উপজেলায় ৮১ জন প্রিসাইডিং অফিসার, ৪১৬ জন সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার এবং ৮৩২ জন পোলিং অফিসার নির্বাচনী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।

আনোয়ারা
আনোয়ারা উপজেলা চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ সমর্থিত তৌহিদুল হক চৌধুরীর (দোয়াত কলম) সঙ্গে বিএনপি সমর্থিত জালাল উদ্দিন আহমেদের (কাপ-পিরিচ) প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে।  

আনোয়ারা উপজেলায় কেন্দ্রের সংখ্যা ৬৬টি। এই উপজেলায় ভোটগ্রহণের জন্য ৬৯ জন প্রিসাইডিং অফিসার, ৪৬৭ জন সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার এবং ১৩৬৯ জন পোলিং অফিসার দায়িত্ব পালন করবেন।

সাতকানিয়া
জামায়াত-শিবিরের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত সাতকানিয়া উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে বিএনপি সমর্থিত অধ্যাপক শেখ মোহাম্মদ মহিউদ্দিন (আনারস), আওয়ামী লীগ সমর্থিত ন‍ূরুল আবছার চৌধুরী (কাপ-পিরিচ) এবং জামায়াত সমর্থিত মোহাম্মদ জসিম উদ্দিনের মধ্যে (মোটর সাইকেল) ত্রিমুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে।

সাতকানিয়া উপজেলায় মোট ১১১টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ভোটগ্রহণের জন্য ১১৭ জন প্রিসাইডিং অফিসার, ৭৫৭ জন সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার এবং ১ হাজার ৫১৪ জন পোলিং অফিসার নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

বাঁশখালী
বাঁশখালী উপজেলার মোট ভোট কেন্দ্র ১১০টি। এ উপজেলার ১১৬ জন প্রিসাইডিং অফিসার, ৭৬৫ জন সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার এবং ১৫৩১ জন পোলিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করবেন।

এ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ সমর্থিত মো.খোরশেদ আলম (দোয়াত-কলম), বিএনপি সমর্থিত আলমগীর কবির চৌধুরী (কাপ-পিরিচ) এবং জামায়াত সমর্থিত মোহাম্মদ জহিরুল ইসলামের (আনারস) মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে।

রাউজান
রাউজান উপজেলায় মোট ৮৩টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ভোটগ্রহণের জন্য ৮৭ জন প্রিসাইডিং অফিসার, ৬৮৫ জন সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার এবং ১৩৬৯ জন পোলিং অফিসার দায়িত্ব পালন করবেন।

রাউজান উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ সমর্থিত এ কে এম এহছানুল হায়দার চৌধুরী বাবুল (দোয়াত-কলম) এবং বিএনপির সমর্থিত প্রার্থী আনোয়ার হোসেনের (আনারস) মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে।

রাঙ্গুনিয়া
রাঙ্গুনিয়ায় মোট ৮৬টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এ উপজেলায় ভোটগ্রহণের জন্য ৯০ জন প্রিসাইডিং অফিসার, ৫৬৭ জন সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার এবং ১১৩৪ জন পোলিং অফিসার নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

রাঙ্গুনিয়ায় চেয়ারম্যান পদে চর্তুমুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে মনে করছেন সেখানকার সাধারণ ভোটাররা। এ উপজেলায় চারজন শক্তিশালী প্রার্থী আছেন। এরা হলেন, আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী মোহাম্মদ আলী শাহ (দোয়াত-কলম), আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী কাজী মোহাম্মদ জসিম (ঘোড়া), বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী আবু আহমেদ হাসনাত (টেলিফোন) এবং যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী পরিবারের সমর্থিত প্রার্থী কুতুব উদ্দিন বাহার (কাপ-পিরিচ)।

ফটিকছড়ি
ফটিকছড়ি উপজেলায়ও প্রার্থীদের মধ্যে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ উপজেল‍ায় চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী এম তৌহিদুল আলম বাবু (আনারস), বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী সরোয়ার আলমগীর (মোটর সাইকেল), জামায়াত সমর্থিত মাওলানা হাবিব আহমদ (দোয়াত-কলম) এবং বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী ছালাহ উদ্দিনের (কাপ-পিরিচ) মধ্যে চর্তুমুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে।

ফটিকছড়ি উপজেলায় ভোট গ্রহণের ১৪০ জন প্রিসাইডিং অফিসার, ৮৭২ জন সহকারী প্রিসাইডিং এবং ১৭৪৩ জন পোলিং অফিসার দায়িত্ব পালন করবেন। এ উপজেলায় মোট ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ১৩৩ টি।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪০ঘণ্টা, মার্চ ২২,২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।