চট্টগ্রাম: গৃহকর্ত্রীর নির্যাতনের শিকার শিশু গৃহকর্মী তামান্না (১০) মারা গেছেন। সোমবার ভোর রাতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিত্সাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
নগরীর পাঁচলাইশ থানার শুলকবহরের পাখিঘর এলাকায় সিইপিজেড ইয়ংওয়ানের হিসাব বিভাগের কর্মকর্তা মোশাররফ হোসাইনের বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করতেন তামান্না। তার বাবা মমিন ভ্যান চালক।
গত ২৪ জানুয়ারী পানি গরম করা নিয়ে মারধরের পর আগুনে দগ্ধ হন এই শিশু গৃহকর্মী। ১৭দিন হাসপাতালে বেডে যন্ত্রণায় ভোগার পর তার মৃত্যু হয়।
অভিযোগ উঠেছিল, সকালে পানি গরম না করায় শিশুটির গায়ে আগুন দিয়েছিল গৃহকর্ত্রী আয়েশা আকতার।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মিশমা ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন,‘মেয়েটির অবস্থা আশঙ্কাজনক ছিল। আগুনে তার শরীরের ৪০ শতাংশ পুড়ে গেছে। সোমবার ভোর রাত ৪টার দিকে তার মৃত্যু হয়। ’
তামান্নার বাবা মমিন বাংলানিউজকে বলেন, ‘যাদের বাসায় কাজ করতো তারাও অনেক চেষ্টা করেছে। তারা চিকিৎসার জন্য প্রায় দেড় লাখ টাকা খরচ করেছে। আল্লাহ হুকুম আছিল মাইয়াটা মারা গেছে। এখন মামলা কইরা লাভ কি। ’
গত ২৫ জানুয়ারী তামান্না বাংলানিউজকে বলেছিলেন,‘শুক্রবার সকালে পানি গরম না করায় আমাকে মারধর করে। পরে পানি গরম করার জন্য ম্যাচের কাঠি জ্বালিয়ে চুলার দিকে এগিয়ে দিতেই আগুন আমার গায়ে লেগে যায়। এরপর কি হয়েছে আমি আর জানি না। ’ গৃহকর্ত্রী আয়েশা আকতার তাকে বিভিন্ন সময় মারধর করেন বলেও জানান তামান্না।
তবে হাসপাতালে আসার পর শিশুটি ও তার মা সালেহা বেগম চিকিৎসক ও বার্ন ইউনিটে থাকা লোকজনকে জানিয়েছিলেন, গৃহকর্ত্রী মারধরের পর গায়ে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে।
ওই সময় হাসপাতালে থাকা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের কর্মকর্তা আবদুল খালেক বাংলানিউজকে বলেন,‘শিশুটিকে যেদিন ভর্তি করা হয়, সেদিন শিশুটির পাশের সীটেই আমার এক স্বজন ছিল। মেয়েটি ও তার মা হাসপাতালে এসেই পানি গরম না করায় গৃহকর্ত্রী গায়ে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে বলেছেন। কিন্তু পরে গৃহকর্ত্রী ও তাদের স্বজনরা এসে ভয়ভীতি দেখায় এবং চিকিৎসা খরচ চালানোর আশ্বাস দেওয়ার পর তারা আর মুখ খুলছে না। ’ একই কথা বললেন বার্ন ইউনিটে ভর্তি অন্যান্য রোগীর স্বজনরাও।
** চট্টগ্রামে শিশু গৃহকর্মীকে অমানুষিক নির্যাতন
বাংলাদেশ সময়: ১২০০ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারী ১০, ২০১৪