ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

‘বনসাই’ ঘিরে শফির নয় বছর

বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন, ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১১৯ ঘণ্টা, জুলাই ২৬, ২০১৭
‘বনসাই’ ঘিরে শফির নয় বছর বনসাই দু’টি শফির পরশে লালিত/ছবি: বাংলানিউজ

মৌলভীবাজার: বনসাই মানেই গভীর ধৈর্যধারণ। বনসাই মানেই প্রতিদিনের অল্প-সল্প যত্নআত্তির রেশ। আর বনসাই মানেই একটি সময়কে ডিঙ্গিয়ে তারপর বেটে গাছটির অশেষ সৌন্দর্য নিয়ে প্রকাশিত হওয়া।

শক্ত কাণ্ড রয়েছে এমন গাছের খর্বাকৃতি করার শিল্পকেই সাধারণত বনসাই বলা হয়। কোনো গাছকে বামুন বা খাটো করে রাখার নামই বনসাই।

পৃথিবীব্যাপী এমন গাছগুলো কদর অনেক বেশি। আমাদের দেশেও বনসাই চাষে মনোনিবেশ করেছেন চাষিরা।

মৌলভীবাজারে বনজ ও ফলদ বৃক্ষমেলার সমাপনী দিন ছিল মঙ্গলবার (২৫ জুলাই)। শেষ বিকেলের আলোয় এ মেলা গিয়ে খুঁজে পাওয়া যায় দু’টি বনসাই। মেলার দশটি প্রদর্শনী ও বিক্রয় স্টলের মাঝে শফি আহমেদের সায়মা নার্সারির দিকেই অনেকের ভিড়। টেবিলের উপর রাখা ‘বনসাই’ গাছের প্রতি আগতদের আগ্রহ সর্বাদিক।

সুদৃশ্য গাছটিকে নান্দনিকতায় খাটো করে টেবিলে রাখা হয়েছে। ৯ বছরের বট কোনো টেবিলে এটে যাবার কথা নয়। কিন্তু গাছটিকে সুন্দরভাবে খর্ব করা হয়েছে বলে টেবিলের আয়তনের মধ্যে এসে শোভাবৃদ্ধি করে সবাইকে আকৃষ্ট করছে।  

শফি আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, আমি নয় বছর ধরে এই গাছটিকে লালন-পালন করে আসছি। এখন দু’টি গাছ প্রায় পঁচিশ হাজার টাকা দাম হচ্ছে। এটি অল্প জায়গাজুড়ে থাকে। আমাদের ঘরে বা অফিসের জানালায়, বেলকানিতে, বারান্দায় ও ছাদের বিভিন্ন স্থানে স্থাপন করে সবুজের পরশ পেতে পারি।

...একটি কাঁঠালি বট এবং অপরটি অর্শ্বথ। আজ থেকে ৮ বছর আগে নিতান্ত শখের বশে একটি টবে এই দু’টো গাছকে নিয়ে বনসাই চাষ শুরু করি বলে জানান শফি।

কোনো প্রশিক্ষণ আছে কি না এমন প্রশ্নে শফি বলেন, না আমি কোনো প্রশিক্ষণ গ্রহণ করিনি। মানুষের মুখে বনসাইয়ের কথা শুনে উৎসাহ লাভ করি। তারপর নিজেই উদ্যোগী হয়ে এই কাজে নেমে পড়ি। আমার কাছে আরো বনসাই রয়েছে। ওইগুলোর বয়স কিছু কম।

বনসাই প্রসঙ্গে শফি আহমেদ আরো বলেন, এটি চীন এবং জাপান দেশের অত্যন্ত জনপ্রিয়। বট, শিরীষ, বকুল, নিম, অশ্বথ, তেঁতুল প্রভৃতি গাছ ট্রে’র মাঝে লাগিয়ে গভীর ধৈর্য নিয়ে গাছটির প্রয়োজনীয় পরিচর্যার মাধ্যমে বয়স বাড়ানো হয়। কান্ড ও গাছের ছাল মোটা হয়। এক সময় গাছটির ঝুরিও নামে। গাছের বয়স অনুযায়ী সে বেঁচে থাকে।
   
দেশবরেণ্য প্রকৃতিবিদ অধ্যাপক দ্বিজেন শর্মা গত বছর চারুকলা অনুষদে বনসাই প্রদর্শনীর উদ্বোধন করে গণমাধ্যমকে বলেন, কোনো হেলাফেলার শিল্প নয় বনসাই। এটা নান্দনিক শিল্প। দিন দিন এর কদরবাড়ছেই। ’

গাছের ‘বামনত্ব’ করা হচ্ছে এমন সমালোচনার কোনো ‘প্রকৃতিগত ভিত্তি নেই’ বলেও মন্তব্য করেন এই প্রকৃতিবিদ।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১০ ঘণ্টা, জুলাই ২৬, ২০১৭
বিবিবি/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।