ঢাকা, মঙ্গলবার, ৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৮ রমজান ১৪৪৫

জলবায়ু ও পরিবেশ

বনবিভাগের জায়গায় অবৈধ বসতি!

বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন, ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬০১ ঘণ্টা, মার্চ ১৪, ২০১৭
বনবিভাগের জায়গায় অবৈধ বসতি! বনবিভাগের জায়গা দীর্ঘদিন থেকে দখল! 

কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) থেকে ফিরে: দীর্ঘদিন থেকে বেদখল হয়ে রয়েছে কমলগঞ্জ উপজেলায় বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের জায়গা। বেদখল করা জায়গাগুলো পুনরুদ্ধারে কর্তৃপক্ষের নেই কোনো উদ্যোগ। 

জানা যায়, কমলগঞ্জ ইউনিয়নের ভেড়াছড়া গ্রামটি এই কালাছড়া বিট সংলগ্ন বাফার এলাকায় অবস্থিত। চল্লিশ-পঞ্চাশ পরিবার প্রায় ষাট-সত্তর বছর ধরে এখানে বসবাস করছে।

এই গ্রামে বন বিভাগের জায়গায় বেশ কয়েক বছর ধরে মানুষ বসতি স্থাপন করে রয়েছে। যারা বিভিন্ন ডিফরেস্টেশনের সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ।  

এই জবরদখল করা জায়গাগুলো যদি উদ্ধার করে সামাজিক বনায়নের আওতায় বাফার বাগান করা যায়, তাহলে স্থানীয়দের আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়ন হবে। পাশাপাশি সরকার তার জমিও ফেরত পাবে।  

বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ ভেড়াছড়া, সরইবাড়ির পার্শ্ববর্তী এলাকায় ৭৫ হেক্টরের সফল সামাজিক বনায়নের মাধ্যমে প্রায় চার কোটি টাকার বাগান কাটতে যাচ্ছে। জায়গাটি বনবিভাগের বাফার জোনে হওয়ায় অবৈধভাবে বসবাস করা অধিবাসীরা বনের গাছপালা, বাঁশ প্রভৃতি নিয়মিত কেটে থাকেন। এমনকী বিপন্ন বন্যপ্রাণীও তারা শিকার করে থাকেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ওই এলাকা থেকে একাধিকবার বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের বন্যপ্রাণী উদ্ধারের ঘটনাও ঘটেছে। যা বন আইনের সম্পূর্ণ পরিপন্থী।  

বনবিভাগের জায়গায় অবৈধ বসতি

রোববার (১২ মার্চ) দুপুরে ভেড়াছড়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, এসব জায়গায় মাটি ও পাকার ঘর নির্মাণ করে দিব্যি বসবাস করছেন কেউ কেউ। দুবাইপ্রবাসী সালামতের বাড়িতে তোলা হচ্ছে নতুন একটি পাকা বাড়িও।  

নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, আসদ্দর আলী, হোসেন আলী, মুসলিম, সুয়েব, বাসিত, মাগুক প্রমুখ ওই এলাকার সরকারি জায়গাগুলো দখল করে রয়েছেন। তারা প্রত্যেকেই গাছ চোর এবং তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই ২০-৩০টি করে পৃথক পৃথক মামলা রয়েছে। স্থানীয় এমপি, চেয়ারম্যান ও সরকারি দলের ছত্রছায়ায় তাদের সংঘবদ্ধ অবস্থান। ৩৭০ একরের সরকারি জায়গাগুলো নিয়ে পাল্টাপাল্টি মামলাও চলমান।  

বনবিভাগের জায়গায় অবৈধ বসতি

পাহাড় রক্ষা ও উন্নয়ন সোসাইটির সভাপতি সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, ভৌগলিক অবস্থানের ভিত্তিতে আমাদের দেশে বনভূমি ও বনজ সম্পদ একেবারেই নগণ্য। দেশের জনসংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন বনের প্রকৃতিক পরিবেশ সুরক্ষা এবং বনসংলগ্ন পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলো দখলমুক্ত রাখা এখন জরুরি হয়ে পড়েছে। আমরা সরকারি জায়গা পুনরুদ্ধারের জোর দাবি জানাচ্ছি।   

বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ, সিলেট বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মিহির কুমার দো বাংলানিউজকে বলেন, ওখানে আমাদের কিছু ভিলেজারও রয়েছেন। তারা বৈধভাবে আছেন। আর অবৈধ বসতিগুলোর ব্যাপারে চলমান মামলার রায় এবং সার্বিক ব্যবস্থা বিবেচনা করে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।  

বাংলাদেশ সময়: ১১৫৪ ঘণ্টা, মার্চ ১৪, ২০১৭
বিবিবি/এসএনএস 
 
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।