ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জলবায়ু ও পরিবেশ

চা শিল্পাঞ্চলে শীত দেরিতে আসার কারণ

বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন, ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৪৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০১৭
চা শিল্পাঞ্চলে শীত দেরিতে আসার কারণ রেললাইনের পাশে কুয়াশাচ্ছন্ন প্রকৃতি / ছবি: তারিক হাসান

শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার): সময়ের শীত সময়ে আসেনি, এসেছে তা দেরিতে। চা শিল্পাঞ্চল শ্রীমঙ্গলে ডিসেম্বরের শেষে তীব্র শীত জেঁকে বসার কথা থাকলেও এমনটা হয়নি। তবে তা জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ থেকে শুরু হয়েছে। বর্তমানে হাড় কাঁপানো শীতে জুবুথুবু এ জনপদের ছিন্নমূল ও দরিদ্র জনগোষ্ঠী।

বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) সকালে শ্রীমঙ্গলে ৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড মাত্রা হয়েছে বলে জানায় স্থানীয় আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র। যা বৃহস্পতিবারের সারাদেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা।

আর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ঢাকায় ২৪ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রটি জানায়, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১১ জানুয়ারি শ্রীমঙ্গলের তাপমাত্রা ছিল যথাক্রমে ১২ দশমিক ৫, ১২ দশমিক ৪, ১১ দশমিক ৩, ১১ দশমিক শূন্য, ১১ দশমিক ২, ১১ দশমিক ৯, ১২ দশমিক ৫, ৮ দশমিক ৮, ৯ দশমিক ৯, ৯ দশমিক ৮ এবং ১০ দশমিক শূন্য।

শ্রীমঙ্গল আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের সিনিয়র অবজারভার মো. হারুনুর রশিদ বাংলানিউজকে বলেন, আজ (বৃহস্পতিবার) দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা শ্রীমঙ্গলে রেকর্ড করা হয়েছে ৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ২০১৬ সালের ১২ জানুয়ারি এবং ২০১৫ সালের ১২ জানুয়ারি শীতের তাপমাত্রা ছিল যথাক্রমে ৯ দশমিক ৩ এবং ১২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

তিনি বলেন, আগামী ৪/৫ দিন হয়তো আরও কিছু তাপমাত্রা কমবে। এরপর হয়তো স্বাভাবিক পর্যায়ে চলে আসবে।

চা শিল্পাঞ্চলে শীত দেরিতে আসার কারণ সম্পর্কে সিলেট আবহাওয়া অফিসের সহকারী পরিচালক (ডিএমও) আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমেদ চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, ‘এর অন্যতম কারণ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব। কয়েক বছর ধরে এ ধারাবাহিকতা বজায় রয়েছে। ২০১৩ সালেই শীত মৌসুমে সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা কমে এসেছি‍লো। এর পরের বছরগুলো থেকে সে রকমভাবে আর তাপমাত্রাকে কমতে দেখা যাচ্ছে না। ’

তিনি বলেন, ‘কুয়াশার পরিমাণ এ বছর নেই বললেই চলে। অন্যান্য বছরের নভেম্বর থেকেই তীব্র কুয়াশা নেমে আসতো। এ বছর তার উপস্থিতি অত্যন্ত কম। ’

‘শুধু তাপমাত্রাই নয়, বৃষ্টিপাতও কমে গেছে। যে সময় বৃষ্টিপাত হওয়ার কথা, ঠিক সময় বৃষ্টিপাত হচ্ছে না। অর্থাৎ জুন, জুলাই, আগস্ট ও সেপ্টেম্বর এ চার মাসে তুলনামূলকভাবে যে পরিমাণ বৃষ্টিপাত হওয়ার কথা, তা না হয়ে আগে হচ্ছে, না হয় পরে হচ্ছে’- বলেন সাঈদ আহমেদ চৌধুরী।

এ আবহাওয়াবিদ আরও বলেন, তাপমাত্রা ও বৃষ্টিপাতের রেকর্ডগুলো পর্যবেক্ষণ করে বলা যেতে পারে, বিশ্বব্যাপী বড় কোনো সমস্যার কারণে আবহাওয়ার এমন পরিবর্তনগুলো আমাদের সামনে ফুটে উঠছে। জলবায়‍ু পরিবর্তনের ফলে যে শুধু তাপমাত্রা বেড়ে যাবে আর কমে যাবে তা নয়। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলাফল প্রকৃতি, পরিবেশ ও আবহাওয়া সুক্ষ্মাতিসুক্ষ্ম বিষয়গুলোর ওপর সুদূরপ্রসারী বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করবে।

তাপমাত্রা এবং জলবায়ুগত এ সমস্যা শুধু বাংলাদেশেই নয়। সারা পৃথিবীজুড়ে এ সমস্যা প্রভাবিত। বাংলাদেশ যেহেতু কৃষি প্রধান দেশ। তাই আমরা এই সমস্যাগুলোর মুখোমুখি বেশি হচ্ছি বলে জানান আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ সাঈদ আহমেদ।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০১৭
বিবিবি/টিআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।