ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

শিল্প-সাহিত্য

যুগপূর্তিতে কবিতাপত্রের সাহিত্য আড্ডা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৩৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০১৯
যুগপূর্তিতে কবিতাপত্রের সাহিত্য আড্ডা

ঢাকা: পথচলার এক যুগ পেরিয়ে গেলো সাহিত্য বিষয়ক ছোটকাগজ কবিতাপত্র। এ উপলক্ষে শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) সাহিত্য আড্ডার আয়োজন করে পত্রিকাটি। একইসঙ্গে মোড়ক উন্মোচিত হয় অকাল প্রয়াত কবি দেলোয়ার হোসেন মঞ্জু স্মরণে কবিতাপত্রের নতুন সংখ্যার।

রাজধানীর কাঁটাবনের কবিতাক্যাফেতে আয়োজিত কবিতাপত্রের যুগপূর্তি আয়োজনের উদ্বোধন করেন কবি ত্রিশাথ জলদাশ।  

দেলোয়ার হোসেন মঞ্জু সংখ্যার মোড়ক উন্মোচন করেন দেশের শীর্ষস্থানীয় নিউজপোর্টাল বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমের সম্পাদক কবি জুয়েল মাজহার ও কবি মজিদ মাহমুদ।

পুরো অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন কবিতাপত্রের সম্পাদক কবি হোসেন দেলওয়ার।

জুয়েল মাজহার বলেন, কবিতাপত্রের জন্মলগ্ন থেকে এর সঙ্গে আমার যোগাযোগ। কবিতাপত্রের কাছে আমার ব্যক্তিগত ঋণ রয়েছে। আমাকে না জানিয়ে কবিতাপত্রের সম্পাদক হোসেন দেলওয়ার আমার কবিতা ও লেখালেখির ওপরে লেখা ছাপিয়েছিলেন। ব্যক্তিগত এ কারণের বাইরেও আমি বলতে চাই, কবিতাপত্র মনোযোগ কাড়ার মতো একটি পত্রিকা। এর নাম, পরিপাটি সজ্জা প্রথম দর্শনেই আর্কষণ করে। মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন কবি জুয়েল মাজহার তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশে যেসব কাগজ বের হয়, তার বন্ধুবেষ্টিত থাকে। সেখান থেকে কবিতাপত্র ভিন্ন। শিল্প-সাহিত্যে আপসহীন মানুষের প্রয়োজন। কবিতাপত্রের সম্পাদক হোসেন দেলওয়ার তেমনই একজন মানুষ। তিনি সবার কথা শোনেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত নিজের সৎ সিদ্ধান্তে অটল থাকেন।  

কবিতাপত্রের দেলোয়ার হোসেন মঞ্জু সংখ্যা প্রসঙ্গে জুয়েল মাজহার বলেন, অকাল প্রয়াত প্রবাসী এ কবিকে নিয়ে অন্য কোনো কাগজ এরকম সংখ্যা প্রকাশ করেনি। কবিতাপত্র প্রকাশ করেছে, এর জন্য তাদের ধন্যবাদ। কবিতাপত্র সাহিত্যকে আরও বেগবান ও ঋদ্ধ করবে, সে সঙ্গে হাজার সংখ্যা প্রকাশ করবে- যুগপূর্তিতে এটাই আমার প্রত্যাশা।

কবি ত্রিশাখ জলদাস বলেন, হোসেন দেলওয়ারকে আমি তার কবিতার মাধ্যমে চিনেছি। তিনি সবসময় পেছনের দিকে থাকতে চান। এর কারণ তিনি নিজেকে লুকিয়ে রাখতে পছন্দ করেন। কিন্তু তার মধ্যেই তিনি কবিতাপত্রের মতো একটি সাহিত্যের কাগজ প্রকাশ করেছেন। দেলোয়ার হোসেন মঞ্জু সংখ্যার মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে কেক কাটছেন অতিথিরাকবি আবদুর রাজ্জাক বলেন, হোসেন দেলওয়ারের সঙ্গে আমার দীর্ঘদিনের সম্পর্ক। ডাক্তারি পেশার ব্যস্ততার মধ্যেও তিনি লেখা সংগ্রহ করেন, বাছাই করেন এবং প্রকাশ করেন। তিনি আসলে কবিতার মানুষ।

দেলেয়ার হোসেন মঞ্জু সম্পর্কে কবি মাজুল হাসান বলেন, তার সময়ের কবিরা তাকে চেনেন না। তাকে চেনেন তার আগের ও পরের কবিরা। এর অর্থ হলো তিনি সমসাময়িক কবি নন। সেজন্যই আমি মনে করি, তিনি সমসাময়িক সময়ের কবি হয়েও কালোত্তীর্ণ। তিনি তার কবিতার মাধ্যমেই আমাদের মধ্যে বেঁচে থাকবেন।

ছোটকাগজ ‘বুনন’ সম্পাদক ও দেলোয়ার হোসেন মঞ্জুর সহচর খালেদ উদ-দীন বলেন, তিনি তার সময়ের কবিদের মধ্যে বিরল। তিনি সময়কে অতিক্রম করে লিখতেন। তার কবিতায় একটি ভিন্নস্বর রয়েছে। যা তাকে সবার থেকে আলাদা করেছে।

কবি সোহেল হাসান গালিব বলেন, আমি মনে করি, মুদ্রণ পত্রিকা কেমন হবে সেটি নিয়ে এখন ভাবতে হবে। ইস্যুভিত্তিক পত্রিকা প্রকাশ করতে হবে। যাতে পত্রিকার সংখ্যাগুলো সংগ্রহে রাখা যায়। হোসেন দেলওয়ার সাহিত্যের প্রতি ভালোবাসা থেকে কবিতাপত্র প্রকাশ করে যাচ্ছেন। এ পত্রিকার কোনো লেখকচক্র নেই। ভালো লেখাই এখানে ছাপা হয়। দেলোয়ার হোসেন মঞ্জু সংখ্যার মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে আগত অতিথিরাকবি শেখ ফিরোজ আহমেদ বাবু বলেন, হোসেন দেলওয়ারকে অস্থির প্রকৃতির মানুষ বলে মনে হয়। কিন্তু তিনি সাহিত্যের প্রতি ধীরস্থির। অনেকেই বলেন, তিনি তার পত্রিকায় লেখা ছাপার ক্ষেত্রে নিরপেক্ষ। কিন্তু আমি মনে করি, তিনি তরুণ কবি-লেখকদের লেখা ছাপানোর ক্ষেত্রে পক্ষপাতদুষ্ট।

অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করেন মোবাশ্বের হোসেন মিহির ও রাশিদা পারভীন।

এতে আরও উপস্থিত ছিলেন- কবি মারুফ রায়হান, কবি তারিক টুকু, কবি জাকির জাফরান, কবি রেজা রাজা, কবি আনোয়ার কামাল, কবি নির্ঝর নৈঃশব্দ্য, কবি সারাজাত সৌম, কবি হাসান রোবায়েত, কবি আহমেদ শিপলু, কবি ও লোক সম্পাদক অনিকেত শামীম প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ২১২৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৯, ২০১৯
ডিএন/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।