ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

শিল্প-সাহিত্য

গাজী আজিজুর রহমানের নতুন বই স্বদেশ ভাবনা ও বঙ্গবন্ধু

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৫৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০১৭
গাজী আজিজুর রহমানের নতুন বই স্বদেশ ভাবনা ও বঙ্গবন্ধু স্বদেশ ভাবনা ও বঙ্গবন্ধু

বাংলাদেশ নিয়ে চিন্তন, মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বিভাবন আমাদের দেশের লেখক-কবিদের একটি অতি দুর্মূল্য অনুষঙ্গ। বিস্তর সেই লেখাজোখার মধ্যে এই বইয়ের লেখাগুলোর মধ্যে ভিন্নতা সহজেই চোখে পড়বে। ইতিহাসের উত্তাল সময়ের কিছু ইতিহাস এই গ্রন্থের মূল বিষয়-আশয়। 

বলা যায়, এই সময় একটা নবজাগরণই ঘটতে চলেছিল বাংলাদেশে, বাঙালির তা দ্বিতীয় রেনেসাঁ হয়তোবা। রুশ বিপ্লবের পর বিশ্বের ইতিহাসে সেই আন্দোলন-সংগ্রাম-যুদ্ধ, একটি নতুন দেশের জন্য আজও ইতিহাসের সবচেয়ে উজ্জ্বল অধ্যায়।


গত শতবর্ষে এদেশে ঘটে যাওয়া মূল ঘটনাসমূহের ইতিহাস ও এর মূল্যায়ন-সমীক্ষণে একটি দ্বান্দ্বিক জীবনদর্শন পাঠককে শুধু মুগ্ধ নয় চিন্তিত করবে, নব ভাবনার খোরাক জোগাবে। বিশেষত সমাজ ও রাজনীতি, বাঙালির সংস্কৃতি নিয়ে লেখাগুলোর মধ্যে ফেলেছে অতিরিক্ত আলো-যা প্রবন্ধগুলোকে দান করেছে দীপ্তি। ইতিহাসের ইতিহাস যে সাহিত্যেরও ইতিহাস, সেসব বিষয় নিয়ে প্রাবন্ধিক গবেষক গাজী আজিজুর রহমানের লেখা স্বদেশ ভাবনা ও বঙ্গবন্ধুতে মিলবে সেই সত্যের স্বাক্ষর। ষোলটি প্রবন্ধের সমন্বয়ে সাজানো অমর একুশে গ্রন্থমেলায় (২০১৭) অন্বেষা প্রকাশন ৯ বাংলাবাজার ঢাকা থেকে প্রকাশিত এই বইটির মূল্য ২৭০ টাকা। বইটির প্রচ্ছদ এঁকেছেন সোহেল আনাম।

অধ্যাপক গাজী আজিজুর রহমান এ দেশের অন্যতম লেখক ও প্রাবন্ধিক। প্রতিভার সপ্তপর্ণা মণি ধারণ করে বাংলা সাহিত্যের রস ভাণ্ডার পূর্ণ করে চলেছে তার লেখনি। খুব কম লিখলেও যা লেখেন ভেবেচিন্তে লেখেন। তার লেখার একটি ব্যতিক্রম বৈশিষ্ট্য রয়েছে। বিশেষ করে মৃত্যু, আত্মহত্যা এবং কবিতাবিষয়ক তার লেখাগুলো পাঠককে বার বার ভাবিত করে, প্রশ্নমুখী করে তোলে। বিশ্বসাহিত্য, ইতিহাস, আধুনিকতা তার প্রিয় লেখালেখির বিষয়-আশয়। এছাড়া সাহিত্য-সংস্কৃতি নিয়ে তার দীর্ঘ আড়াই দশকের লেখা পাঠককে জুগিয়েছে নবভাবনার খোরাক। তার ভাষার বিরলতা, ভাবনার দুর্লভতা এবং সবকিছু নিয়ে সাহিত্য হয়ে ওঠার যে অন্যনতা তিনি তার অনাপ্য উদাহরণ।

দেশের সুদূর দক্ষিণ প্রান্তে সাতক্ষীরা জেলার কালীগঞ্জ কলেজের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে দীর্ঘ চৌত্রিশ বছর কাজ করেছেন তিনি। ইত্যবসরে নিজেকে সম্পূর্ণ নিয়োজিত করেছেন গবেষণাকর্ম ও সংস্কৃতিসেবায়। সাতক্ষীরা কালীগঞ্জে বসে কাজ করলেও তার গবেষণাকর্ম ঢাকা-কলকাতা পর্যন্ত বিস্তৃত এবং সমাদৃত। পরিশ্রমী কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ বেশ কয়েকটি সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: সাতক্ষীরা সাহিত্য একাডেমী পুরস্কার (১৯৯৫); ম্যান অব দি ইয়ার, বায়োগ্রাফিক্যাল ইনস্টিটিউট, যুক্তরাষ্ট্র (১৯৯৮); কবি জসীমউদ্দীন সাহিত্য পুরস্কার (২০০১); শিমুল-পলাশ সাহিত্য পুরস্কার, কলকাতা (২০০৪); বাংলা ভাষা সাহিত্য সংস্কৃতি চর্চাকেন্দ্র পুরস্কার (২০০৭); লিনট পদক পুরস্কার (২০০৮); সিকানদার আবু জাফর পদক (২০১২); কবি সুকান্ত পুরস্কার (কলকাতা ২০১৫)।

সম্পাদনার কাজেও তার মুন্সিয়ানা রয়েছে। দীর্ঘদিন সম্পাদনা করে যাচ্ছেন ‘নদী’ নামে একটি সাহিত্যপত্র। এছাড়াও রয়েছে প্রচুর অনিয়মিত সম্পাদনা।

প্রকাশিত গ্রন্থসমূহ 
প্রবন্ধ গবেষণা: সাহিত্যে সমাজবাস্তবতার ধারা (১৯৯২ ও ২০১৪); স্বেচ্ছামৃত্যুর করতলে কবি (১৯৯৬ ও ২০১৫); সাহিত্য ও সিংহাসন (১৯৯৯); নোবেল সাহিত্য পুরস্কারের শতবর্ষ (২০০১); সাতক্ষীরার ভাষা ও শব্দকোষ (২০০৪); আধুনিক বাংলা উপন্যাসের বিষয় ও শিল্পরূপ (২০০৯); কবিদের কবি (২০১০); কালীগঞ্জের ইতিহাস ও মুক্তিযুদ্ধ (২০১৪)।  

সম্পাদনা: মরণরে তুহু মম (২০০৪) এবং খান আনসার উদ্দীন আহমেদ রচনাবলী (১৯৯৯)।  

অন্যান্য প্রকাশনা: বজ্রের বাঁশি (উপন্যাস), কালো সূর্যের নীচে (নাটক), যোদ্ধার জতুগৃহ (উপন্যাস)।  

এই লেখকের জন্ম ১৯৪৭ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর দার্জিলিংয়ে। পিতা কাসেম আলী গাজী, মা করিমন্নেসা।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০১৭
এসএনএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।