ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

শিল্প-সাহিত্য

ঢাকায় ত্রিপুরার শিল্পকর্ম

রবাব রসাঁ | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৮ ঘণ্টা, মার্চ ১৯, ২০১১
ঢাকায় ত্রিপুরার শিল্পকর্ম

আমাদের প্রতিবেশী ত্রিপুরার শিল্পীদের শিল্পকর্মগুলো চৈতালী বাতাসের মতোই মন জুড়িয়ে দেয়। কাজের বিষয়গুলোকে মনে হয় অনেক পরিচিত ও আপন।

১৪ জন শিল্পীর ৩৭টি কাজের মধ্যে ৩০টি চিত্রশিল্প, বাকিগুলো ভাস্কর্য।

ভারতের উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলোর শিল্পীদের সংগঠন ‘কিরাত’-এর আয়োজনে অনুষ্ঠিত ত্রিপুরার শিল্পীদের এই শিল্প প্রদর্শনী উদ্বোধন করা হয় ১৯ মার্চ সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জয়নুল আর্ট গ্যালারিতে। এটি শেষ হবে ২৫ মার্চ। খোলা থাকবে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত।

ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরার তিন পাশেই বাংলাদেশ। রাজ্যের অধিবাসীদের অনেকেরই জন্ম হয়েছিল বাংলাদেশে। অনেকের আদিনিবাসও এ দেশে। তাদের ভাষা এক। মিল রয়েছে সংস্কৃতি ও খাদ্যাভ্যাসে। তাই ত্রিপুরার শিল্পীদের বিষয় ও শৈলীতে পাওয়া যায় এ দেশের শিল্পীদের কাজের অন্তর্গত মিল।

চন্দন মজুমদারের ‘দ্য হলি গার্ল’-এ দেখা যায় বাঁশঝাড়ের আড়ালে এক পাহাড়ি নারী। অ্যাক্রেলিক অন ক্যানভাসে শিল্পীর তুলির আঁচড়ে চমৎকারভাবে উঠে এসেছে প্রকৃতির সবুজ। নারীর পোশাকের ঐতিহ্যবাহী হলুদ রঙ তাকে করেছে আরো আকর্ষণীয়।

একইভাবে চন্দনের ‘লেডি উইথ বাফেলো’ চিত্রকর্মটিতে মহিষের পিঠে চড়ে বাঁশঝাড়ের পাশ দিয়ে এক তরুণীর চলে যাওয়ার দৃশ্যটি আটকে রাখে দর্শকদের। তার ‘বিউটি অব ত্রিপুরা’ তুলে ধরেছে সেই রাজ্যের লোকজীবন।

শুধু চিরচেনা মূর্ত চারপাশই নয়, ত্রিপুরার শিল্পীদের মনের বিমূর্ত ভাবনাগুলোতেও রয়েছে চিরন্তন আবেদন। পার্থপ্রতিম গাঙ্গুলীর ‘টেল অব সিটিস ইন ডেসপায়ার’ সিরিজের কাজগুলো দেখে দর্শক-মনের হতাশার রেখাগুলো সজীব হয়ে উঠে।

রাজীব রুদ্র পাল তার ‘কম্পোজিশন রেড অ্যান্ড ব্লু’ চিত্রকর্মে দুজন মানুষকে দুটি রঙে রাঙিয়ে তুলেছেন। অ্যাক্রেলিক অন ক্যানভাসের এই কাজটিতে লাল ও নীল রঙের মানুষ দুটিকে আমাদের আশপাশের পরিচিতজন বলেই মনে হয়।

প্রদর্শনীতে বিমূর্ত কাজগুলোর ভেতর দেবব্রত ভারতীর ‘কম্পোজিশন অব নেচার’ সিরিজটি প্রকৃতির সৌন্দর্যের বিকিরণ ছড়ায়। তার নীলের ব্যবহার দর্শকের চোখে বুলিয়ে দেয় শান্তির পরশ।

সপ্তাহব্যাপী এই প্রদর্শনীটি উদ্বোধন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আআমস আরেফিন সিদ্দিক। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ত্রিপুরা রাজ্যের বিধায়ক পবিত্র কর। উপস্থিত ছিলেন প্রদর্শনীর আয়োজক ‘কিরাত’-এর সভাপতি সলিল সাহা, সংগঠনের সহ-সভাপতি পার্থপ্রতিম গাঙ্গুলী, সম্পাদক চন্দন মজুমদার, চারুকলা অনুষদের ডিন শিল্পী মতলুব আলী।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বাংলাদেশ ও ভারতের, বিশেষ করে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যের শিল্পীদের ভেতর সাংস্কৃতিক মেলবন্ধনের ওপর জোর দেন এবং এ ধরনের প্রদর্শনী নিয়মিত আয়োজনের আশাবাদ প্রকাশ করেন।

বাংলাদেশ সময় ১৫৪৫, মার্চ ১৯, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad