ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

শিল্প-সাহিত্য

‘আবেগই টেনে নিয়ে আসে বইমেলায়’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১, ২০১১
‘আবেগই টেনে নিয়ে আসে বইমেলায়’

ঢাকা: সব বই এখনও আসেনি। প্রস্তুত হয়নি অধিকাংশ প্রকাশকের নতুন-পুরনো বইয়ের ক্যাটালগ।

মূল চত্বরের বাইরে রাস্তার দু’পাশের বেশির ভাগ স্টলই বইশূণ্য। এরপরও প্রথম দিনই জমজমাট হয়ে ওঠে অমর একুশে বইমেলা।

মঙ্গলবার প্রথম দিনে মেলা প্রাঙ্গণ সবার জন্য উন্মুক্ত থাকে মাত্র আড়াই ঘণ্টা। এ অল্প সময়েও বইপ্রেমী মানুষের আনাগোনা ছিল চোখে পড়ার মতো। তবে বুধবার থেকে ৩টা-৯টা অর্থাৎ পুরো ছয় ঘণ্টা সময়ই পাবেন ক্রেতা-দর্শনার্থীরা।

ধূলিময় মেলা প্রাঙ্গণে কথা হয় কলাবাগন থেকে আসা মনসুর আলমের সঙ্গে।

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘ভাষা আন্দোলনের চেতনা আর বইমেলাÑ এ দুয়ের কেমন যেন একটা মিল পাই। এটা হয়তো অমর একুশে স্মরণে এই বইমেলা আয়োজন হয় বলে। তাই প্রথম দিনই এখানে আসার টান সামলাতে পারলাম না। ’

আজিমপুরের বাসিন্দা রুমা আক্তার এসেছেন দুই সন্তানকে নিয়ে।

বললেন, ‘ওদের জন্য (সন্তান) বই কিনবো। জানতাম, প্রথম দিন সব বই আসবে না। এরপরও হাতে সময় ছিল বলে ওদের নিয়ে এলাম। ’

কাওরানবাজারে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সাহেদ আলম বলেন, ‘বলতে পারেন আবেগের টানে ছুটে আসি। প্রতিদিনই আসার চেষ্টা করবো। ’

আরও বেশ ক’জনই বললেন, ‘বই কিনি আর না-ই কিনি, বইমেলায় এলেই কেমন যেন মনটা ভালো থাকে। হয়তো ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ থেকেই। ’

একটি মিডিয়া প্রতিষ্ঠানের প্রশাসন বিভাগের কর্মকর্তা ফারহানা দিবাও এসেছেন মেলায়। জানালেন, মেলা থেকে বই কেনার জন্য বছরজুড়ে টাকা জমান তিনি। এবারও তার বাজেট প্রায় ৩০ হাজার টাকা।

বললেন, ‘আজ বেশিরভাগ প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের ক্যাটালগ আসেনি। দেখি দুয়েক দিনের মধ্যে আবার আসবো। ’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক তরুণ কবি অভিযোগ করলেন উদ্বোধনী অনুষ্ঠান নিয়ে।

বললেন, ‘অনেক দেরিতে মেলা প্রাঙ্গণ আমাদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দীর্ঘ সময় নিয়ে নিয়েছে। তা না হলে আজ আরও বেশি সময় নিয়ে ঘুরে দেখতে পারতাম। ’

অধিকাংশ স্টলের বিক্রয়কর্মীদের মূল বক্তব্য ছিল ‘ক্রেতা কম, দর্শক বেশি’।

তাদের ভাষায়, ‘প্রথমদিন, ক্রেতার চেয়ে দর্শনার্থী বেশি থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। আমাদের প্রস্তুতিরও অনেক ঘাটতি থাকে। তাই আজ বেচা কেনার চেয়ে দর্শনার্থীদের সামলানোটাই বেশি হচ্ছে। ’

তারা বলেন, ‘অনেকেই আসছেন নতুন বইয়ের খোঁজখবর নিতে। তালিকা সংগ্রহ করতে। পরে এক সময় এসে কিনবেন। তবে একেবারে যে বিক্রি হয়নি, তাও নয়। হয়েছে, খুবই কম। ’

এ প্রসঙ্গে উৎস প্রকাশনের স্বত্বাধিকারী মোস্তফা সেলিম বাংলানিউজকে বলেন, ‘আজ যারা মেলায় এসেছেন, তারা মূলত আবেগের কারণে এসেছেন। ঘুরে ঘুরে নতুন কী কী এসেছে দেখছেন। কেউ কেউ হয়তো মনের মতো বই পেয়ে কিনে নিচ্ছেন। ’

বইমেলা পুরোপুরি জমজমাট হতে আরও কয়েকদিন লাগবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

উল্লেখ্য, মঙ্গলবার বিকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ মেলার উদ্বোধন করেন। এরপর সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে মেলা প্রাঙ্গণ সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ সময়: ২১৫৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০১, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।