ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

দুঃখ ঘুঁচলো বীরাঙ্গনা আলিফজানের

মাজেদুল নয়ন; স্টাফ করোসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০১২
দুঃখ ঘুঁচলো বীরাঙ্গনা আলিফজানের

দিরাই (সুনামগঞ্জ) : বীরাঙ্গনা আলিফজান বিবির মুখে হাসি। প্রাপ্ত টাকা দিয়ে প্রথমে ভালো খাবেন।

তারপর ডাক্তার দেখাবেন। তারপর ...।

‘জমি বন্ধকী রাইখুম’ বললেন আলিফজান বিবি। জনতা ব্যাংকের দিরাই শাখায় ব্যাংক একাউন্ট খোলা শেষে বাংলানিউজকে তিনি এ কথা বললেন।

গত ১৪ ডিসেম্বর সুনামঞ্জের দিরাই উপজেলার চন্ডীপুর গ্রামের আলিফজান বিবিকে নিয়ে বাংলানিউজে খবর প্রকাশিত হলে এক মহানুভব ব্যক্তির দৃষ্টি কাড়ে।

একাত্তরে পাকবাহিনীর হাতে নির্যাতিতা আলিফজান বিবির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ও তাকে সহায়তা করতে তিনি চলে আসেন বাংলানিউজ অফিসে।

তিনি এবং তার কোম্পানি উদ্যোগ নেয় আলিফজান বিবিকে সাহায্য করার। এককালীন ১২ হাজার টাকা এবং প্রতি মাসে ১ হাজার টাকা করে দেওয়ার কথা বলেন তিনি। কিন্তু এ মহানুভব মানুষ নিজের এবং তার কোম্পানির নাম প্রকাশ করতে অনিচ্ছা প্রকাশ করেন। এছাড়া আরও একজন নারী এগিয়ে এসেছেন এই বীরাঙ্গনাকে সন্মান প্রদর্শনে। তিনিও দিয়েছেন ৫০০ টাকা।

দাতারা সবাই বাংলানিউজকে অনুরোধ করেন, আলিফজান বিবির কাছে টাকা পৌঁছে দিয়ে সাহায্য করার জন্য। বাংলানিউজের এডিটর ইন চিফ আলমগীর হোসেন তাদের আশ্বাস দেন।

সোমবার দুপুরে বাংলানিউজের প্রতিবেদক চন্ডীপুর গ্রামের আলিফজান বিবির খাতুন পাড়ার বাড়িতে যান। সেখান থেকে প্রতিবেশী ব্রাকের প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষিকা সেতারা বেগমকে নিয়ে জনতা ব্যাংকে যান।

সেতারা বেগম হচ্ছেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে প্রথম আলিফজান বিবির খবর দেওয়া রুনা বেগমের মা।

ব্যাংকের ম্যানেজার সৈয়দ ফজলুর রহমান বাংলানিউজ এবং দাতাদের উদ্যোগের একজন অংশীদার হতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছেন বলে জানান। তিনি ব্যাংক একাউন্ট খুলে দিতে সাহায্য করেন।

ব্যাংক একাউন্ট খোলার জন্যই জীবনে প্রথমবারের মতো পাসপোর্ট আকারের ছবি তোলা হয় আলিফজানের।

সব কাজ শেষে আলিফজানকে অনেকটা খুশি খুশি দেখাচ্ছিল। অন্তত আর ওষুধ কেনার জন্য বা ভালো কিছু খাওয়ার জন্যে কারো কাছে টাকা চাইতে হবে না।

বাংলানিউজের প্রতিবেদকের ফোনে তিনি কথা বলেন তাকে সহায়তাকারী ব্যক্তির সঙ্গে। ফোনে ভালো করে কথা না বলতে পারলেও সালাম দিয়ে শুধু ‘হুঁ’ ‘হুঁ’ করছিলেন। এক সময় অশ্রু গড়িয়ে পড়ে তার চোখ বেয়ে।

এর আগে বাড়িতে বসে আলিফজান বিবি বাংলানিউজকে জানান, আজই তার ঘর উঠানোর জন্যে মাপ নিতে আসবেন মিস্ত্রী। ডিসেম্বরে বাংলানিউজে খবর প্রকাশিত হলে স্থানীয় মেয়র আজিজুর রহমান বুলবুল আলিফজান বিবিকে ঘর তুলে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০১২

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ