ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

নির্বাচন ও ইসি

‘অনুকূল’ পরিস্থিতিতে নৌকা-লাঙ্গলের লড়াই বৃহস্পতিবার

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০১৭
‘অনুকূল’ পরিস্থিতিতে নৌকা-লাঙ্গলের লড়াই বৃহস্পতিবার

ঢাকা: সকল প্রস্তুতি সম্পন্নের পর রংপুর সিটি কর্পোরেশনের (রসিক) ভোটাররা মাহেন্দ্রক্ষণের অপেক্ষায়। রাত পোহালেই শুরু হবে ভোটের উৎসব।

বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণ করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইতোমধ্যে নির্বাচনী এলাকায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।


 
নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সরফুদ্দিন আহম্মেদ ঝন্টু (নৌকা), জাতীয় পার্টির প্রার্থী মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা (লাঙ্গল), বিএনপির প্রার্থী কাওসার জামান বাবলা (ধানের শীষ), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের প্রার্থী আব্দুল কুদ্দুছ (মই), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের এটিএম গোলাম মোস্তফা (হাতপাখা) ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টি’র (এনপিপি) সেলিম আখতার (আম) এবং জাতীয় পার্টির বিদ্রোহী (স্বতন্ত্র) প্রার্থী হোসেন মকবুল শাহরিয়ার (হাতি) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তবে তাদের মধ্যে মূল লড়াই হবে ঝন্টু ও মোস্তফার মধ্যে।
 
নগরীর ৩৩টি সাধারণ ওয়ার্ডে ১৭৯ জন এবং ১১টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৬৩ জন নারী কাউন্সিলর প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সংরক্ষিত ওয়ার্ডে নাদিরা খানম হিজড়া নামের একজন তৃতীয় লিঙ্গের প্রার্থীও রয়েছেন।
 
৩ লাখ ৯৩ হাজার ৮৯৪ জন ভোটার এ নির্বাচনে প্রার্থী বাছাইয়ের সুযোগ পাচ্ছেন। মোট ১৯৩টি কেন্দ্রের ১ হাজার ১৭৮টি ভোটকক্ষে ভোটগ্রহণ কাজে নিয়োজিত থাকবেন ৩ হাজার ৫৫৯ জন কর্মকর্তা।
 
নির্বাচন উপলক্ষে মাঠে রয়েছেন ৫ হাজারের বেশি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য। বিচারিক ও নির্বাহী মিলিয়ে অর্ধশতাধিক ম্যাজিস্ট্রেটও দায়িত্ব পালন করছেন। স্থানীয় প্রশাসনও রয়েছে বাড়তি কড়াকড়িতে।
 
রসিক নির্বাচনের তিনটি ভোটকক্ষ সিসিটিভিতে (ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা) সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করা হবে। একটি ভোটকক্ষে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণের কথা রয়েছে।
 
নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে বুধবার (২০ ডিসেম্বর) বিকেলে নির্বাচন ভবনের সংবাদ সম্মেলনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা বলেছেন, ‘নির্বাচনের সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত আমাদের যে অবজারভেশন, তাতে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ অনুকূলে রয়েছে। সুন্দর, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে। আমরা রংপুর সিটি নির্বাচনকে মডেল নির্বাচন করতে চাই। ভোটাররা যেন নির্বিঘ্নে ভোট দিয়ে বাড়ি যেতে পারেন, সে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে’।
 
রংপুর নগরের ভোটাররা বলছেন, নৌকার প্রার্থী ঝন্টু ও লাঙ্গলের প্রার্থী মোস্তফার মধ্যেই হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। এক্ষেত্রে মোস্তফার পুঁজি ব্যক্তিগত ইমেজ আর লাঙ্গল হলেও ঝন্টুর কেবল নৌকা। কেননা, নগরের বর্ধিত অংশের উন্নয়ন না করতে পারা এবং আচরণ ভালো না হওয়ায় সংশ্লিষ্ট অংশের ভোটাররা বর্তমান মেয়র ঝন্টুর প্রতি নারাজ।

এ অংশের ভোট রয়েছে ১ লাখ ৬০ হাজার। অর্থাৎ ওই ভোটাররাই নির্ধারণ করবেন নতুন নগরপিতা।
 
২০১২ সালের ২০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে দলের সমর্থন ছাড়াই বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে মোস্তফা পেয়েছিলেন ৭৭ হাজার ৮০৫ ভোট। আর ঝন্টু  পেয়েছিলেন ১ লাখ ৬ হাজার ২৫৫ ভোট। সে সময় মাত্র ২৮ হাজার ৪৫০ ভোটের ব্যবধানে তিনি পরাজিত হন। ওই নির্বাচনে মোস্তফার এতো ভোট কেবল তার ব্যক্তিগত ইমেজের কারণেই এসেছে বলে মনে করছেন অনেকে। কেননা, সে সময় জাতীয় পার্টির সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে বহিস্কৃত অবস্থায় নির্বাচন করেছিলেন তিনি।
 
এবার যারা ঝন্টুর প্রতি বিরাগভাজন তাদের ভোটও মোস্তফার কাছে চলে আসার সম্ভাবনার কথা বলছেন অনেক নগরবাসী। এর সঙ্গে যোগ হচ্ছে জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীক। সেদিক থেকে লাঙ্গলের জোয়ার দেখছেন অনেকে।
 
তবে নির্বাচন কমিশন পরিস্থিতি ‘অনুকূলে’ বললেও লাঙ্গলের প্রার্থী মোস্তফার অভিযোগ, প্রশাসন এখানকার সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করেনি। কাজেই প্রশাসনিক বাধাই তার জেতার ক্ষেত্রে একমাত্র বাধা। তবে ভোটের দিন এ বাধাকে অতিক্রম করবে তার দল।
 
বাংলাদেশ সময়: ২১১৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০১৭
ইইউডি/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।