ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

নির্বাচন ও ইসি

‘না-ভোট’ চালু ও সংসদ ভেঙে দেওয়ার সুপারিশ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৩৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১২, ২০১৭
‘না-ভোট’ চালু ও সংসদ ভেঙে দেওয়ার সুপারিশ

ঢাকা: জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পুনরায় ‘না-ভোটের’ বিধান চালু করার সুপারিশ করেছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)। একইসঙ্গে সংসদ ভেঙে দিয়ে সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণের প্রস্তাবও করেছে তারা।

বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে সংলাপে বসে দলের নেতারা এমন দাবি করেন। আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংলাপে সিপিবি’র সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমের নেতৃত্বে ১১ সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশ নেয়।


 
সংলাপ শেষে মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, সুষ্ঠু, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য সংসদ ভেঙে দিয়ে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করতে হবে। এক্ষেত্রে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বা সহায়ক সরকার বা কোনো সরকারের অধীনে নয়, নির্বাচন কমিশনের অধীনেই নির্বাচন করতে হবে। কেননা, প্রচলিত ব্যবস্থায় নির্বাচন প্রহসনে পরিণত হয়েছে। এখান থেকে বেরিয়ে এসে নির্বাচনী ব্যবস্থার আমুল সংস্কার করা প্রয়োজন।
 
সংলাপে সিইসির কাছে ১৬ দফা লিখিত সুপারিশ জমা দেয় সিপিবি। সুপারিশগুলোর মধ্যে রয়েছে- তফসিল ঘোষণার পূর্বেই বিদ্যমান জাতীয় সংসদ ভেঙে দিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিপ্রার্থীদের মধ্যে সমতা বিধান করতে হবে, যতদিন সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ব্যবস্থা চালু না হচ্ছে ততদিন আরো তিনটি ব্যবস্থা-সংরক্ষিত নারী আসনের সংখ্যা ১০০ তে উন্নীত ও সরাসরি ভোট করতে হবে, নির্বাচিত প্রতিনিধি দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ ওই প্রতিনিধিকে প্রত্যাহারের বিধান করতে হবে ও না ভোটের বিধান যুক্ত করতে হবে।
 
দলটির অন্য সুপারিশগুলোর মধ্যে রয়েছে- অনলাইনে মনোনয়ন জমা দেওয়ার ব্যবস্থা করা; স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থনের বিধান বাতিল, জাতীয়ভিত্তিক সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ব্যবস্থা চালু করা, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দলের মনোনীত প্রার্থী হতে হলে কোনো ব্যক্তিকে কমপক্ষে ৫ বছর রাজনৈতিক দলের সক্রিয় সদস্য শর্ত যোগ, নির্বাচনে টাকার খেলা বন্ধ করা, সন্ত্রাস, পেশি শক্তির প্রভাব ও দুর্বৃত্তমুক্ত নির্বাচন করা, নির্বাচনে ধর্ম, সাম্প্রদায়িকতা ও আঞ্চলিকতার অপব্যবহার রোধ করা, নির্বাচনে সকলের সম-সুযোগ নিশ্চিত করা, নির্বাচনী এলাকা নির্ধারণে ও নির্বাচন পরিচালনায় স্বচ্ছতা বিধান করা, নির্বাচন কমিশন, নির্বাচনী আইন ও বিধির সংস্কার করা এবং নির্বাচনী বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য স্বতন্ত্র আদালত গঠন করতে হবে।
 
গত ৩১ জুলাই সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এবং ১৬ ও ১৭ আগস্ট গণমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সংলাপে বসেছিলো ইসি। এরপর গত ২৪ আগস্ট থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু করে নির্বাচন কমিশন।
 
সংলাপে আসা এ পর্যন্ত সুপারিশগুলোর মধ্যে সারাদেশে সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন, সেনা মোতায়েন, বর্তমান সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী দলগুলোকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন, প্রতি ভোটকেন্দ্রে সিসি টিভি/ক্যামেরা স্থাপন, নবম সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী দলগুলোকে নিয়ে অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠন, দশম সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী দলগুলোকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন, ‘না ভোট’ প্রবর্তন, প্রবাসে ভোটারধিকার প্রয়োগ, জাতীয় পরিষদ গঠন, নির্বাচনকালীন অস্থায়ী সরকার গঠন, নির্দলীয় নির্বাচনকালীন সরকার, নির্বাচনের সময় সংসদ ভেঙে দেওয়া, রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহার, নির্বাচনকালীন সময়ে ইসির অধীনে জনপ্রশাসন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা, দলের নির্বাহী কমিটিতে বাধ্যতামূলকভাবে ৩৩ শতাংশ নারী সদস্য রাখান বিধান তুলে নেওয়া অন্যতম।
 
আগামী ১৫ অক্টোবর বিএনপি (ধানের শীষ) এবং ১৯ অক্টোবর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের (নৌকা) সঙ্গে বসবে নির্বাচন আয়োজনকারী এই কর্তৃপক্ষটি।
 
এবারের সংলাপ শেষ হচ্ছে আগামী ২৪  অক্টোবর। এক্ষেত্রে ২২ অক্টোবর নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে, ২৩ অক্টোবর নারী নেত্রীদের সংলাপে বসছে নির্বাচন কমিশন।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৪২৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ১২, ২০১৭
ইইউডি/বিএস 
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।