ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

নির্বাচন ও ইসি

সর্বদলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের সুপারিশ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৭
সর্বদলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের সুপারিশ

ঢাকা: জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে সংসদ ভেঙে দিয়ে সর্বদলীয় সরকারের অধীনে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন করার সুপারিশ এসেছে নির্বাচন কমিশনে (ইসি)। একইসঙ্গে বিচারিক ক্ষমতা দিয়ে প্রয়োজনে নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের সুপারিশও এসেছে।

রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে সংলাপে বসে এসব সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি ও ঐক্যবদ্ধ নাগরিক আন্দোলন।
 
ইসির সভাকক্ষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নুরুল হুদার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংলাপে বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এমএ মুকিনের নেতৃত্বে ১২ সদস্যের প্রতিনিধি অংশ নেয়।


 
সংলাপে মোট ১২টি প্রস্তাব দেয় দলটি। প্রস্তাবনার মধ্যে রয়েছে- নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি নির্বাচনকালীন সর্বদলীয় সরকার গঠন, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই ১০ম জাতীয় সংসদ ভেঙে দেওয়া, নির্বাচনের অন্তত ছয় মাস আগে ভোটারদের হালনাগাদ তালিকা ওয়েব সাইটের মাধ্যমে প্রকাশ, নির্বাচনের তিন মাস আগ থেকে নির্বাচনের পরবর্তী অন্তত একমাস পর্যন্ত বিচারিক ক্ষমতা দিয়ে সেনাবাহিনী মোতায়েনের ব্যবস্থাকরণ, প্রতিটি বিভাগে পৃথকদিনে ভোটগ্রহণ, নির্বাচন শেষে এক দিনে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা এবং যে সকল কর্মকতার রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ততা ছিল বা আছে এমন কর্মকর্তাদের নির্বাচন পরিচলনার সকল পর্যায়ে দায়িত্ব দেওয়া থেকে বিরত রাখা।
 
এছাড়া ভোটকেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা স্থাপন, দূতাবাস ও কনস্যুলেটগুলোতে ভোটগ্রহণের ব্যবস্থা, নির্বাচন কমিশনের খরচে ও সকল প্রার্থীদের পর্যাপ্ত পরিমাণ পরিচিতি সভা (এক মঞ্চে সবাই), সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য অনুপাতিক হারে সংসদে আসন বন্টন ও ‘না’ ভোট প্রবর্তন।
 
এদিকে ঐক্যবদ্ধ নাগরিকের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাহানারা বেগম আলোর নেতৃত্বে ৫ সদস্যের প্রতিনিধি সংলাপে নিয়েছে। দলটির পক্ষ থেকে ১০ দফা সুপারিশ করা হয়েছে।  

সুপারিশগুলোর মধ্যে রয়েছে- পরিস্থিতি বিবেচনায় সেনা মোতায়েন, কালো টাকা, সন্ত্রাস ও পবিত্র ধর্মের অপব্যবহার মুক্ত নির্বাচন, ধর্মের নামে রাজনীতি করে এমন দলকে নির্বাচনে অংশগ্রহনের সুযোগ না দেওয়া-এমন দলের নিবন্ধন বাতিল ও ভবিষ্যতে নিবন্ধন না দেওয়া, নির্ভয়ে ভোটাধিকার প্রয়োগের ব্যবস্থাকরণ, ভোটার সংখ্যা অনুপাত এবং প্রশাসনিক এরিয়া বিবেচনায় সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ করা, জনগণের মাধ্যমে পুন:যাচাই সাপেক্ষে ভোটার তালিকা চূড়ান্তকরণ, নির্বাচনপূর্ব এবং নির্বাচনোত্তর পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে মাঠে রাখা এবং মনোনয়নপত্র অনলাইনে জমা দেওয়ার সুযোগ নিশ্চিত করা।
 
এ নিয়ে ১২টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ সম্পন্ন নির্বাচন কমিশন। ১৮ সেপ্টেম্বর বেলা ১১টায় বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ (গাভী), বিকেল ৩টায় প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দলক-পিডিপিকে (বাঘ) সময় দিয়েছে সংস্থাটি।
 
আবার ২০ সেপ্টেম্বর বেলা ১১টায় গণফ্রন্ট (মাছ), বিকেল ৩ টায় গণফোরাম (উদীয়মান সূর্য) এবং ২১ সেপ্টেম্বর বেলা ১১ টায় জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ (খেজুর গাছ) এবং বিকেল ৩ টায় ন্যাশনাল পিপলস পার্টিকে-এনপিপিকে (আম) ডেকেছে সংস্থাটি।
 
বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট পার্টি ও ইসলামী ঐক্যজোট সংলাপে নির্ধারিত সময়ে অংশ না নিয়ে পরবর্তীতে সময় দিতে ইসির কাছে আবেদন করেছে।
 
গত ৩১ জুলাই সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এবং ১৬ ও ১৭ আগস্ট গণমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সংলাপে বসেছিল ইসি। এরপর গত ২৪ আগস্ট থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু করে নির্বাচন কমিশন।
 
সংলাপে এ পর্যন্ত কয়েক ডজন সুপারিশ এসেছে। সেনা মোতায়েন, না ভোটের প্রবর্তন, প্রবাসে ভোটারধিকার প্রয়োগ, জাতীয় পরিষদ গঠন, নির্বাচনকালীন অস্থায়ী সরকার গঠন, নির্দলীয় নির্বাচনকালীন সরকার, নির্বাচনের সময় সংসদ ভেঙ্গে দেওয়া, রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহার ও নির্বাচনকালীন সময়ে ইসির অধীনে জনপ্রশাসন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা, দলের নির্বাহী কমিটিতে বাধ্যতামূলকভাবে ৩৩ শতাংশ নারী সদস্য রাখান বিধান তুলে নেওয়া ইত্যাদি সুপারিশগুলোর মধ্যে অন্যতম।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০১৭
ইইউডি/বিএস 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।